শিরোনাম

পলাতক মৎস্যজীবী লীগ নেতার অনুসারীদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ

Views: 12

বরিশালের পোর্ট রোড বাজার ও ঘাট ইজারা নিলেও আশপাশের আধা কিলোমিটার পর্যন্ত বিআইডব্লিউটিএর সড়ক থেকে চাঁদা তোলার অভিযোগ উঠেছে। প্রতিদিন তিন শতাধিক দোকানির কাছ থেকে চাঁদা নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। বছরের শেষে এই চাঁদার পরিমাণ গিয়ে দাঁড়ায় অর্ধকোটি টাকায়, যা রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করা হয়।

সূত্রে জানা যায়, বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক নিরব হোসেন টুটুলের অধীনে পোর্ট রোড বাজারের একক নিয়ন্ত্রণ ছিল। তবে, ২০২৩ সালের সিটি নির্বাচন শেষে, খায়ের আব্দুল্লাহ মেয়র নির্বাচিত হলে বাজারের আধিপত্য চলে যায় তার অনুসারী মৎস্যজীবী লীগ নেতা খান হাবিবের হাতে। তিনি ২০২৪ সালের জুন থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত তার স্ত্রীর নামে বাজারের ইজারা নেন।

এমন পরিস্থিতিতে, বাজারের বাইরে বিআইডব্লিউটিএর মালিকানাধীন সড়কের দুই পাশের প্রায় ৩০০ ব্যবসায়ী থেকে চাঁদা তোলা হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, তারা প্রতিদিন ৫০ টাকা করে চাঁদা দিচ্ছেন। একটি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী জানান, “আমরা জানি না, ইজারাদার বাজারের জন্য ইজারা নিয়েছেন নাকি সরকারি রাস্তার জন্য, কিন্তু ইজারাদারের প্রতিনিধি প্রতিদিন আমাদের কাছ থেকে টাকা নেয়।” অন্য এক ব্যবসায়ী বলেন, “আওয়ামী লীগ আমলেও চাঁদা দিয়েছি, এখনো দিতে হয়। এই রাস্তা দিয়ে ট্রাক ঢুকলেই টাকা দিতে হয়। ছোট গাড়ির কাছ থেকেও চাঁদা তোলা হয়।”

চাঁদাবাজির অভিযোগের বিষয়ে মিজানুর রহমান রানা, ইজারাদারের প্রতিনিধি বলেন, “পোর্ট রোড বাজার সিটি করপোরেশন থেকে ৩০ লাখ টাকায় আমাদের ইজারা নেওয়া। সড়কে যেসব অবৈধ দোকান বসে, তা উচ্ছেদের জন্য বলি, কিন্তু ভাসমান দোকানিরা আমাদের কথা শোনেন না।” তিনি আরও জানান, সড়কের অবৈধ দোকানিদের কাছ থেকে কোনো টাকা নেওয়া হয় না। তবে, বাজারের ইজারার আওতাধীন দোকানিরা নিয়মিত ইজারা ফি প্রদান করে।

বরিশাল নদী বন্দর কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “পোর্ট রোড বিআইডব্লিউটিএ নির্মাণ করেছে এবং আমরা এই রোডটি কারো কাছে ইজারা দিইনি। কিছু লোক এখানে দোকান বসিয়েছে, তা আমরা শিগগিরই উচ্ছেদ করব।” বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল বারী বলেন, “পোর্ট রোডটি বিআইডব্লিউটিএর মালিকানাধীন এবং এখানে সিটি করপোরেশন কোনো দোকান বসানোর অনুমতি দেয়নি। অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করা হবে।”

এমন পরিস্থিতিতে, প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে, কিন্তু ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, কোনো অভিযান চালানোর পর পরের দিন আবার দোকান বসিয়ে সড়ক দখল করে নেওয়া হয়। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ইজারাদারদের নির্ধারিত এলাকা থেকেই চাঁদা তোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে, কিন্তু অন্য জায়গা থেকে চাঁদা তোলা আইনবহির্ভূত এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মো: তুহিন হোসেন,
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *