শিরোনাম

এখনো কেনো টান পড়েনি রাশিয়ার অস্ত্র ভান্ডারে

Views: 40

যেমনটা ভেবেছিলো পশ্চিমা দেশগুলো তেমনটা হচ্ছে না। রাশিয়ার অস্ত্র ভান্ডারে এখনো টান পড়েনি। বরং যুদ্ধ ক্ষেত্রে নতুন নতুন অস্ত্রের ব্যবহার দেখছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্ররা। বিবিসি বাংলা অবলম্বনে লিখেছেন মোহাম্মাদ খান।

রাশিয়ার কাছে যেন বিদেশি সামরিক সরঞ্জাম পৌঁছাতে না পারে তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দেয় দেশগুলো। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাজ্য। ব্রিটিশ সরকারের ভাষ্যমতে, রাশিয়ার ওপর এটি তাদের ‘সবচেয়ে বড় নিষেধাজ্ঞা’। এটি আরোপ করা হয়েছে তুরস্ক, দুবাই, স্লোভাকিয়া এবং সুইজারল্যান্ডের কিছু ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও ব্যবসায়ীকে লক্ষ্য করে।

ব্রিটিশ পররাষ্ট্রসচিব জেমস ক্লেভারলি বলেছেন, এই পদক্ষেপের ফলে রাশিয়ার অস্ত্রভাণ্ডার আরও সঙ্কুচিত হয়ে পড়বে এবং বর্তমানে ধুঁকতে থাকা প্রতিরক্ষা খাতকে আবার চাঙ্গা করে তুলতে পুতিনের যে সরবরাহ লাইন রয়েছে, সেই জাল গুটিয়ে আনা সম্ভব হবে।

কিন্তু বিষয় হলো- যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার পরেও এখনো যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সামরিক যন্ত্রাংশ ও রসদ সংগ্রহ করে যাচ্ছে রাশিয়া।

এটি কীভাবে ঘটছে তার ব্যাখ্যা বেশ জটিল। কিন্তু এর পেছনে রয়েছে মূলত পশ্চিমা প্রযুক্তি, বিশেষ করে মাইক্রোচিপের মতো ক্ষুদ্র কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি হস্তগত করার ব্যাপারে রাশিয়ার সক্ষমতায় কখনো ভাটা না পড়া।

ব্যালিস্টিক এবং ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রসহ রাশিয়ার ভাণ্ডারের বেশিরভাগ অস্ত্রেই যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, জাপান, ইসরায়েল ও চীনে তৈরি ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ প্রচুর পরিমাণে ব্যবহৃত হয়।

কিয়েভের কেএসই ইনস্টিটিউট এবং রুশ নিষেধাজ্ঞা বিষয়ক আন্তর্জাতিক ওয়ার্কিং গ্রুপ ইয়েরমাক-ম্যাকফ্যল গত জুন মাসে জব্দ করা ৫৮টি রুশ অস্ত্র বিশ্লেষণ করে সেগুলোর মধ্যে ১ হাজার ৫৭টি পৃথক বিদেশি যন্ত্রাংশ দেখতে পায়। এগুলোর প্রায় অর্ধেকই ছিল মাইক্রোচিপ ও প্রসেসর এবং সেগুলোর প্রায় তিন ভাগের দু’ভাগ মার্কিন কোম্পানির তৈরি।

শুধু তাই নয়, তালিকার শীর্ষ পাঁচটি কোম্পানির সবগুলোই যুক্তরাষ্ট্রের, যার মধ্যে রয়েছে অ্যানালগ ডিভাইসেস, টেক্সাস ইন্সট্রুমেন্ট এবং ইন্টেল।

এই গবেষকরা ইউক্রেনে রাশিয়ার পুরো মাত্রায় আক্রমণ শুরু করার সময় থেকে রুশ অস্ত্রশস্ত্রে ব্যবহৃত যন্ত্রাংশ ও উপাদানগুলো খতিয়ে দেখেছেন এবং সেখান থেকেও একই তথ্য পেয়েছেন।

এসব অতি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক যন্ত্রাংশগুলোর বেশিরভাগের ওপরই রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ থাকায় রাশিয়া কোনো পশ্চিমা সরবরাহ সংস্থার কাছ থেকে সরাসরি সেগুলো কিনছে না। পরিবর্তে তৃতীয় বেশ কিছু দেশের একটা বিস্তৃত নেটওয়ার্কের মাধ্যমে এসব যন্ত্রাংশ কিনছে তারা।

তবে পশ্চিমা কর্মকর্তারা বলছেন, যদিও রাশিয়া এখনো উল্লেখযোগ্য পরিমাণ সেমিকন্ডাক্টার আমদানি করতে পারছে, কিন্তু সেগুলো সবসময় উন্নত মানের নয়।

এক কর্মকর্তা বলেন, গত বছরের শেষের দিকে রাশিয়ার সেমিকন্ডাক্টার আমদানি বাড়তে শুরু করলেও ২০২৩ সালের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি নাগাদ সেই পরিমাণ দুই-তৃতীয়াংশ কমে গেছে।

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *