বরিশাল অফিস :: পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি প্লান্ট বিকল হয়ে যাওয়ায় গত দু’দিন ধরে বরিশালে বিদ্যুৎ সরবরাহে বিপর্যয় ঘটেছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অর্ধেক সময়ও বিদ্যুৎ থাকছে না। গত সোমবার দিবাগত মধ্যরাত থেকে এমন অবস্থা চলছে। শহর-গ্রাম সর্বত্রই একই অবস্থা।
চলমান তীব্র ভ্যাপসা গরমের মধ্যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিংয়ে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। আগামী এক সপ্তাহেও অবস্থার উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে নিশ্চিত করেছেন ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ওজোপাডিকো) বরিশালের গ্রিড স্টেশনের দায়িত্বশীলরা।
তারা জানান, এ গ্রিডের আওতাধীন বরিশাল ও ঝালকাঠিতে চাহিদার বিপরীতে অর্ধেকের কিছু বেশি সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে। এ অবস্থায় ২০ ভাগ হারে লোডশেডিং দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করেন তারা। যদিও বাস্তবে লোডশেডিং অনেক বেশি হচ্ছে বলে জানান ভুক্তভোগীরা।
গ্রিড স্টেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আক্তারুজ্জামান পলাশ বলেন, পায়রার দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি বন্ধ রয়েছে। দুটি থেকে ৬৬০ মেগাওয়াট করে মোট ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হতো। এ বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডের মাধ্যমে বরিশাল, ঝালকাঠি, গোপালগঞ্জসহ কিছু কিছু জায়গায় সরবরাহ করা হয়। একটি প্লান্ট বন্ধ থাকায় পায়রায় উৎপাদন অর্ধেক কমেছে। এ জন্য বরিশালে প্রায় ৫৮০ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে ৪৫০ থেকে ৫০০ মেগাওয়াট সরবরাহ করা যাচ্ছে। আগামী মাসের ৩-৪ তারিখে বিকল প্লান্টটি সচল হতে পারে বলে জানান তিনি।
বরিশাল বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ কেন্দ্র-১ এর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী দীপক মিস্ত্রি বলেন, তাদের আওতাধীন (বরিশাল, ঝালকাঠি, নলছিটি) বিদ্যুতের চাহিদা ৮২ মেগাওয়াট। কিন্তু সরবরাহ পাচ্ছেন ৫৬ মেগাওয়াট। বিদ্যুৎ কম পাওয়ায় লোডশেডিং দিতে হচ্ছে।
বরিশাল বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ কেন্দ্র-২ এর ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, গত দু’দিন চাহিদার অর্ধেকের বেশি বিদ্যুৎ তারা পেয়েছেন।
এদিকে গত কয়েক দিনের ভ্যাপসা গরম ও লোডশেডিংয়ে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। বিশেষ করে গভীর রাতে বিদ্যুৎ বন্ধ হওয়ায় নির্ঘুম কাটাতে হয়। লোডশেডিংয়ে নগরের আদালতপাড়া, সরকারি দপ্তর, বিসিক শিল্পনগরে সংকট দেখা দিয়েছে। পশ্চিম কাউনিয়ার গৃহিণী শাম্মী জাহান বলেন, গভীর রাতে যখন মানুষ ঘুমিয়ে পড়ে, তখন বিদ্যুৎ চলে যায়। এতে বয়স্ক ও শিশুদের বেশি কষ্ট হচ্ছে। কাশিপুরের বাসিন্দা সুজন চৌধুরী বলেন, লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণায় অর্ধেক রাতও ঘুমাতে পারি না।