পটুয়াখালী প্রতিনিধি :: ৪ দিন ধরে বন্ধ পটুয়াখালীর পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি ইউনিট। ফলে দক্ষিণাঞ্চলসহ গোটা দেশে লোডশেডিং দেখা দিয়েছে চরমে। গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন।
বিদুৎ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, শিডিউল মেইনটেনেন্সের জন্য সাময়িকভাবে এক ইউনিট বন্ধ রয়েছে। তবে অপর ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ দেয়া হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সোমবার (২৪ জুন) বিকেলে বন্ধ হয় পটুয়াখালীর পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি ইউনিট। ১৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দুই ইউনিটের একটি বন্ধ হওয়ায় দক্ষিণাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে দেখা দেয় লোডশেডিং। দৈনিক ছয়-সাত ঘণ্টা বিদ্যুৎ মিলছে না। তাই গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন।
আরো পড়ুন : বাউফলে কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের তত্বাবাধায়ক প্রকৌশলী শাহ আব্দুল হাসিব জানান, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে কেন্দ্রে নিয়মিত যন্ত্রাংশ রক্ষণাবেক্ষণের আওতায় এক ইউনিটের উৎপাদন সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ হয়। তবে ৪ জুলাই ইউনিটটির রক্ষণাবেক্ষণ কাজ শেষে ফের উৎপাদন শুরু হবে।
জাতীয় গ্রিডে কর্মরত একজন সহকারী প্রকৌশলী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, পটুয়াখালী জেলায় মোট বিদ্যুতের চাহিদা ১০০ মেগাওয়াট। সেখানে বুধবার থেকে তারা বিদ্যুৎ পাচ্ছেন মাত্র ৫০ মেগাওয়াট। এ অবস্থায় বেশি মাত্রায় লোডশেডিং দিতে বাধ্য হচ্ছেন। সাম্প্রতিক সময়ে সারাদেশে ন্যাশনাল ক্রাইসিসের কারণে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ বেশি হচ্ছে। তার ওপর পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের দুটি ইউনিটের একটি থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ না হওয়ায় পটুয়াখালী জেলায় লোডশেডিং বেড়ে গেছে। তবে সম্মিলিতভাবে বিদ্যুৎ বিভাগ চেষ্টা চালাচ্ছে এই ‘ন্যাশনাল ক্রাইসিস’ থেকে মুক্ত হওয়ার।
ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের পটুয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী দীন মোহাম্মদ মুহিম জানান, এ জেলায় মোট ৩২ হাজার গ্রাহকের জন্য ১৪ মেগাওয়াট বিদ্যুতের প্রয়োজন। কিন্তু বর্তমানে ১০-১২ মেগাওয়াট পাওয়া যাচ্ছে। ফলে পৌর এলাকায়ও মাঝে মধ্যে লোডশেডিং দিতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।
দেশের সর্ববৃহৎ বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র পায়রা। কয়লাভিত্তিক এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চীন ও বাংলাদেশের যৌথ বিনিয়োগে নির্মিত হয়েছে। ২০২০ সালের ১৫ মে প্রথম কেন্দ্রটি পুরোপুরি উৎপাদনে আসে।
এরপর ২০২৩ সালের ২৫ মে ডলার সংকটে কয়লার দাম পরিশোধ করতে না পারায় গত তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটির ৬৬০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন প্রথম ইউনিট বন্ধ হয়ে যায়। একই কারণে ৫ জুন দুপুরে কেন্দ্রটির ইউনিটটিও সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়।