শিরোনাম

পিরোজপুরে খাল দখলে প্রভাবশালীদের রাজত্ব, কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত

Views: 6

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলায় দীর্ঘ বছর ধরে প্রভাবশালীদের দখলে রয়েছে খাল ও বিভিন্ন সরকারি সম্পত্তি। এর ফলে খাল সংকুচিত হয়ে পড়েছে এবং নাব্যতা সংকট দেখা দিয়েছে। এদিকে পানি প্রবাহে বাঁধ সৃষ্টি হওয়ায় কৃষকদের ফসলী মাঠ নষ্ট হচ্ছে, যা তাদের জন্য ব্যাপক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এবছরের দক্ষিণাঞ্চল দিয়ে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় রিমাল-এর কারণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হলে স্থানীয় কৃষক ও জনতা বিক্ষুব্ধ হয়ে পৌর শহরের দক্ষিণ বন্দর স্লুইজগেট ও বেতমোর ইউনিয়নের কালিরহাট বাজার সংলগ্ন বাধ কেঁটে দেন। তবে, উপজেলা প্রশাসন বারবার অবৈধ দখল উচ্ছেদ কর্মসূচি পরিচালনা করলেও প্রভাবশালীরা নানা কৌশলে মামলা দায়ের করে তা থামিয়ে দিচ্ছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মঠবাড়িয়ার প্রথম শ্রেণির পৌরসভার মধ্যে বেশ কিছু জায়গায়, যেমন বহেরাতলা, দক্ষিণ বন্দর স্লুইজগেট, পিয়াজ হাটা, হাসপাতাল সম্মুখ খালে প্রায় এক কিলোমিটার জায়গা, দক্ষিণ বন্দর স্লুইজগেট থেকে আন্দারমানিক পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার এবং মঠবাড়িয়া-গুলি শাখালী সড়কের খালেরপাড়ে কয়েক শতাধিক পাকা স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। বিশেষ করে সাপলেজা বাজারের পশ্চিম অংশে আলিশ্যার মোড় এলাকায় খাল দখল করে শতাধিক পাকা স্থাপনা নির্মাণ হয়েছে।

এছাড়া, সাপলেজা ইউনিয়নের বাবুরহাট বাজার, মিরুখালী, বড়মাছুয়া, তুষখালী ইউনিয়নের জানখালী বাজার, গুদিঘাটা বাজারসহ উপজেলা বিভিন্ন জায়গায় খালের দু‘পাশ দখল করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাসাবাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে। এর ফলে খালের পানি মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে, যা স্থানীয় পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর।

স্থানীয় বাসিন্দা আলী হায়দার বলেন, “বহেরাতলা তিন খালের মোহনা ভূমিদস্যুরা যেভাবে খাল ভরাট করে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করছে, তাতে মনে হচ্ছে এটি তাদের পূর্বপুরুষদের সম্পত্তি।” তিনি প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেন, যাতে খালগুলো নিশ্চিহ্ন হয়ে না যায়।

অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নূর হোসাইন মোল্লা অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদে প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ কামনা করেন। তিনি আরও বলেন, “আদালতও উচিৎ বাদির বক্তব্য শুনে নিষেধাজ্ঞা না দিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত নেওয়া।”

মঠবাড়িয়া ফায়ার স্টেশন কর্মকর্তা মো. সোহেল আহম্মেদ জানান, অবৈধ দখলদারদের কারণে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের পানি সংগ্রহে সমস্যা হয়। এর ফলে আগুন লাগলে দ্রুত পানি সরবরাহ করা সম্ভব হয় না, যা অনেক সময় অনাকাঙ্খিত ক্ষতির কারণ হয়।

মঠবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক আবদুল কাইয়ূম জানান, অবৈধ দখল উচ্ছেদ কর্যক্রম চলমান রয়েছে, তবে ভুক্তভোগীরা কিছু সময় নিতে চাইছে।

মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম

 

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *