এস এম পারভেজ (পিরোজপুর): সম্ভাবনাময় বিদেশী ফল ‘অ্যাভোকেডো’ এখন পিরোজপুরের মাটিতে চাষ করে ব্যাপক সফলতা ও সাড়া ফেলেছেন একজন সৌখিন কৃষি উদ্যোক্তা। এমন একজন অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্যের ফল বাগানে এখন শোভা পাচ্ছে থোকায় থোকায় সবুজ রংয়ের পুষ্টি সমৃদ্ধ ‘অ্যাভোকেডো’।
পিরোজপুর জেলার উত্তরের ছোট্ট জনপদের নাম নাজিরপুর উপজেলা। এখানের মাটি, আবহাওয়া ও জলবায়ু দেশী-বিদেশী বিভিন্ন জাতের ফলজ বৃক্ষ উৎপাদনে উপযোগী হওয়ায় কৃষকরা প্রতিবছর ঝুঁকছেন নতুন নতুন ফলজ চাষাবাদের দিকে। এখানের মাটিতে মাল্টা, আনার, চুঁইঝাল, আপেল, বিদেশী আম, ড়্রাগন এবং সর্বশেষ ‘অ্যাভোকেডো’ ফল উৎপাদন করে এলাকায় ব্যাপক হৈচৈ পড়ে যায়। তাই ওই গ্রামে যার পতিত জমি রয়েছে তারাও এখন এগিয়ে আসছেন বিদেশী এই ফল চাষে আগ্রহী হয়ে।
এ গ্রামেরই শিক্ষিত যুবক যিনি চাকরী ছেড়ে দিয়ে নিজের বাড়ি এসে নিজের জমিতে ঘের করে সাদা মাছ চাষ করছেন। রয়েছে তার গাভী গরু ও হাাস-মুরগীর ফার্ম। এখন লাখ টাকার পুঁজির মালিক তিনি। সরেজমিনে. কথা বলতে গিয়ে এই তরুন যুবক মোঃ শরীফ হোসেন “চন্দ্র দীপনিউজ ২৪কে” জানান, তাদের বাড়িতে এখনও অনেক পতিত জমি পরে আছে। তিনিও হিরু কাকার মত ‘অ্যাভোকেডো’ ফলের বাগান গড়ে তুলবেন।
বাংলাদেশে যেসব বিদেশী ফল অধুনা চাষ জনপ্রিয়তা পাচ্ছে তার মধ্যে ‘অ্যাভোকেডো’ অন্যতম। মেক্সিকো ও গুয়াতামালা এ ফলটির আদি উৎপাদনের স্থান। ফলটিতে প্রচুর পরিমান প্রোটিন, খনিজ পদার্থ ও ভিটামিন এ,সি,ই ও কে, সমৃদ্ধ। এ বছর এই ফল প্রচুর উৎপাদন করে সাড়া ফেলেছেন অবসরপ্রাপ্ত এই সেনা সদস্য মোঃ লোকমান হাকিম হিরু।’
অ্যাভোকেডো’ ফলের আকার অনেকটা পেয়ারা বা নাশপতির মতো দেখতে। এক একেকটা ফলের ওজন হয় প্রায় ৩শ’ থেকে ৭শ’ গ্রাম পর্যন্ত। অ্যাভোকেডো ঢাকাসহ বিভিন্ন বড় শহরের ফলের দোকানে বিক্রয় হয়। তবে, এর পুষ্টিগুন অত্যাধিক পরিমানে থাকায় মূল্য অনেক বেশী। বাজারে প্রকারভেদে প্রতি কেজি বিক্রয় হয় ১ হাজার থেকে ১২ শ’ এবং ১৮ শ’ টাকা পর্যন্ত।
সাবেক ওই সেনা সদস্য লোকমান হাকিম হিরু জানান, তার ছোট ভাই সেনা সদস্য কঙ্গোতে চাকরির সুবাদে সেখানে ছিলেন। পরে দেশে ফেরার সময় তিনি সেখান থেকে ‘অ্যাভোকেডো’র ১২টি বীজ সংগ্রহ করেন। পরে নিজের গ্রামে এনে রোপন করেন। তন্মধ্যে ৮টি বীজের চারা ঝড়ে নষ্ট হয়ে যায়। বাকী চারটি গাছে এবছর সহস্রাদিক ফল ধরেছে।
নাজিরপুর উপজেলার শেখমাটিয়া ইউনিয়নের পূর্ব বানিয়ারি ব্লকের উপ-সহকারি কৃষি অফিসার বিজন কৃষ্ণ হাওলাদার “চন্দ্র দীপনিউজ ২৪কে” জানান, ‘অ্যাভোকেডো’ ফলটি আফ্রিকা অঞ্চলের একটি ফল। এই ফলের চাষ এখনো বাংলাদেশে শুরু হয়নি। তবে, ‘অ্যাভোকেডো’ সম্পর্কে যাদের পূর্ব থেকে ধারনা আছে তারা কেউ কেউ বাড়ির আঙ্গিনায় রোপন করেছেন। পুষ্টি চাহিদা অন্যন্য ফলের চেয়ে অনেক বেশী এবং অনেক ঐষধি গুন রয়েছে। বিশেষ করে হার্ট যাদের দুর্বল তাদের জন্য এ ফলটি অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করে। এছাড়া, ক্যান্সার প্রতিরোধ করে থাকে।