পিরোজপুরের শংকরপাশা ইউনিয়নের স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা বেল্লাল ফরাজী তার অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের কারণে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করেছেন। তার বিরুদ্ধে মাদক বিক্রির, চুরি, মারামারি, ও নিরীহ মানুষের ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে। গত ৫ আগস্টের পর তার দৌরাত্ব আরও বেড়ে গেছে এবং বর্তমানে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
বেল্লাল ফরাজী, যিনি চালনা গ্রামের স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা, অনেক বছর ধরে একটি অপরাধী চক্র গঠন করে এলাকায় মাদক ব্যবসা ও চুরি চালিয়ে আসছেন। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে এবং কয়েকবার পুলিশের হাতে ধরা পড়লেও, কখনোই সুষ্ঠু বিচার হয়নি। তার নামের সঙ্গে রয়েছে একাধিক মারামারির ঘটনাও।
সম্প্রতি, বেল্লাল ফরাজী ও তার সহযোগীরা চালনা গ্রামের একটি নিরীহ পরিবারকে লক্ষ্য করে হামলা চালায়। অভিযোগ রয়েছে, এই হামলার সময় পরিবারের সদস্যদের মারধর ও বাড়িতে ভাংচুর করা হয়। হামলাকারীরা টাকা, স্বর্ণালংকারসহ অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র লুটে নেয়। হামলার শিকার মো. মাহফুজ শেখ জানান, প্রথমে তার ছোট ভাইয়ের গায়ে হাত দেয় বেল্লাল ফরাজী। এরপর, তার সঙ্গে কথা কাটাকাটি হওয়ার পর বেল্লাল ফরাজী ও তার সঙ্গীরা তার বাড়িতে হামলা চালায়। হামলার সময় মাহফুজের গর্ভবতী স্ত্রীর পেটেও লাথি মারে, যা পরবর্তীতে চিকিৎসকের কাছে নেওয়া হয়।
এ ঘটনায় পিরোজপুর সদর থানায় মামলা দায়ের করা হলেও, বেল্লাল ফরাজী ক্ষমতাশালী দলের কর্মী হওয়ায় তার বিরুদ্ধে এখনো কোন সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। গ্রামবাসী এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে তার বিচার দাবী করেছেন এবং জেলা বিএনপি ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাদের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন।
এদিকে, বেল্লাল ফরাজী তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগকে মিথ্যা বলে দাবি করেছেন। তিনি জানান, তিনি কাউকে মারধর করেননি, বরং তার ওপর হামলা করা হয়েছে। তবে গ্রামবাসীর দাবি, এ ধরনের নেতাদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বন্ধ না হলে, এলাকার পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়ে যাবে। তারা এ ধরনের অপরাধীদের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবি জানাচ্ছেন।
পিরোজপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আসাদুজ্জামান মিঠু জানিয়েছেন, যদি বেল্লাল ফরাজীর বিরুদ্ধে এ ধরনের গুরুতর অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তবে তাকে দলের পদ থেকে বহিষ্কার করা হবে। জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদুল ইসলাম কিসমত বলেন, বিএনপি বা এর অঙ্গ সংগঠনের সদস্যদের অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পিরোজপুর সদর থানার ওসি মো. সোবাহান জানিয়েছেন, বেল্লাল ফরাজীর বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে, আইন অনুযায়ী দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম