শিরোনাম

বরগুনায় কৃষকদের মাঝে সরিষা চাষে আগ্রহ বাড়ছে

Views: 43

বরিশাল অফিস :: বরগুনার তালতলীতে সরিষা চাষে কৃষকদের মাঝে ব্যাপক আগ্রহ বেড়েছে। কম সময়ে, কম খরচে অধিক ফলন পাওয়ায় এই সরিষা আবাদ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে এ বছরও ভাল ফলনের আশা করছে এ অঞ্চলের কৃষকরা। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় ভাল ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর। কৃষি আবাদ থেকে হারিয়ে যাওয়া সরিষা আবার নতুন সম্ভাবনা নিয়ে ফিরে এসেছে। সরিষা ফুলের হলুদে হলুদে ছেয়ে গেছে তালতলী উপজেলার মাঠ-প্রান্তর। মাঠভরা হলুদ ফুল দেখে ভালো ফলনের স্বপ্ন দেখছেন কৃষক।

কম খরচ ও পরিশ্রমে অধিক ফলন পাওয়া যায় সরিষা চাষে। পাশাপাশি ফসল বিক্রি করে ভালো দামও পাওয়া যায়। তাই সরিষা চাষে দিন দিন আগ্রহী হয়ে উঠছেন তালতলীর কৃষকরা। মাত্র তিন মাসে সরিষা ঘরে তুলতে পাড়ায় এখন একই জমিতে সরিষা, ইরি ও আমন চাষ করছেন কৃষকরা। তিনটি ফসল চাষ করতে পেরে বোনাস ফসল হিসেবে সরিষা চাষে বিপ্লব ঘটেছে কৃষকদের মাঝে। সরিষার চাষে উৎপাদন খরচ কম এবং ফলন বেশি হওয়ায় কৃষকরা বেশ লাভবানও হচ্ছে।

মোমেশে পাড়া গ্রামের কৃষক চান থান রাখাইন বলেন, ‘প্রতি বিঘা জমিতে সরিষার ফলন হয় প্রায় ৮ মণ। তাই প্রতি বিঘা সরিষা চাষে সর্বোচ্চ পাচঁ থেকে ছয় হাজার টাকার বেশি খরচ হয় না। বিক্রি করা যায় কমপক্ষে ৩০ থেকে ৩২ হাজার টাকায়। ফলে প্রতি বিঘা সরিষা আবাদে খরচ বাদে মোট লাভ দাঁড়ায় ২৪ থেকে ২৫ হাজার টাকা।’

তবে তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘আমি কৃষক হয়েও প্রণোদনার সার বীজ পাইনি, কৃষি অফিস থেকে প্রণোদনা ও পরামর্শ পেলে আগামীতে আরো ভাল ফসল ফলাতে সক্ষম হবো।’

নলবুনিয়া গ্রামের কৃষক শংকর সিকদার বলেন, ‘আমি কৃষি অফিস থেকে প্রণোদনার সার ও বীজ পেয়ে ১ বিঘা (৩০শতাংশ) জমিতে সরিষা চাষ করেছি, আমার ৪০০০ থেকে ৫০০০ টাকা খরচ হয়েছে। ফলন ভাল হয়েছে, আশা করি সাত থেকে আট মণ সরিষা হবে।’

কৃষকরা আরো জানান, ‘সরিষার পাতা মাটিতে পড়ে জৈব সার তৈরি হয়। তাই এইসব জমিতে পরে ফসল ইরি-আমন আবাদে নন-ইউরিয়া সার কম লাগে। এতে করে আমন আবাদে খরচ অনেক কমে যায়। এছাড়া সরিষার শুকনো গাছ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করেন তারা।’

স্থানীয় কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সরিষার আবাদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিনামূল্যে বীজ-সারসহ নিয়মিত প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে থাকেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার সরিষার বাম্পার ফলন আশা করছেন তারা।

তালতলী কৃষি বিভাগ জানায়, বারি-১৪, বীনা-৪ ও বীনা-৯ সরিষা আবাদ করা হচ্ছে। সারাদেশের মতো তালতলীতেও ৭০০ কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও সার প্রণোদনা হিসেবে বিতরণ করা হয়েছে। গত অর্থ বছরে তালতলীতে সরিষার আবাদ হয়েছিল যেখানে ২৭ হেক্টর, সেখানে চলতি বছরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪০ হেক্টর কিন্তু আবাদ হয়েছে ১০০ হেক্টর। এই বৃদ্ধির ধারা আগামীতেও অব্যাহত রাখতে নানামুখী পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে এই বিভাগ। মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের পাশে থেকে সরিষার আবাদ বৃদ্ধির জন্য কাজ করে যাচ্ছেন এই বিভাগের কর্মীরা।

তালতলী উপজেলা ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা মো: রাসেল জানান, ‘সরকার তেল ফসল বৃদ্ধির প্রকল্প হিসেবে সরিষার আবাদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রণোদনা দিয়েছে, তাই কৃষি বিভাগ থেকে সরিষা চাষে কৃষকদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করা হচ্ছে। সরিষা আবাদের শুরুতে কিছু বৃষ্টি হয়েছে এরপরও ফলন ভাল হবে বলে আশা করছি।’

 

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *