বরগুনার ১৫টি খেয়াঘাট থেকে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হলেও, যাত্রীদের জন্য সঠিক সেবা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে তেমন কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। জেলা পরিষদের ইজারা দেওয়া এসব ঘাটে অনেক ক্ষেত্রেই যাত্রীদের জন্য নেই আলাদা ঘাট বা নিরাপদ ওঠানামার ব্যবস্থা, ফলে যাত্রীরা প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। এছাড়া, যাত্রীছাউনি দখল হয়ে যাওয়া ও ঘাটের জরুরি সংস্কারের অভাবে অনেক ঘাটের অবস্থাও বেহাল।
বরগুনা জেলা পরিষদ সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে বরগুনার ১৫টি খেয়াঘাট থেকে ইজারাদারদের কাছ থেকে মোট ৫ কোটি ২২ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ রাজস্ব আসে পুরাকাটা-আমতলী খেয়াঘাট থেকে, যেখানে এক কোটি ৫৩ লাখ টাকা আদায় হয়েছে। কিন্তু, যাত্রীদের সুবিধার জন্য এখানে আলাদা ঘাটের ব্যবস্থা না থাকায় ফেরির পন্টুন থেকেই যাত্রীদের ওঠানামা করতে হয়। এতে অনেক সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরি হয়। বিশেষ করে মোটরসাইকেল ওঠানামার সময় এই দুর্ঘটনা আরও বেড়ে যায়।
এই অবস্থার মধ্যে যাত্রীদের জন্য নির্মিত যাত্রীছাউনিগুলিও পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে। বহু ঘাটের যাত্রীছাউনির জায়গাগুলো দখল হয়ে গিয়ে, বা অন্য কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। এমনকি, কিছু ঘাটের টয়লেটগুলিও ভেঙে পড়ে রয়েছে।
বিশেষত, পুরাকাটা এবং বড়ইতলা-বাইনচটকি খেয়াঘাটের যাত্রীরা অভিযোগ করেছেন, যে কারণে তাদের চলাচলে নিরাপত্তার অভাব দেখা দেয়। এসব ঘাটে নির্মিত যাত্রীছাউনিগুলো দূরে থাকার কারণে যাত্রীদের বসার জায়গা ও সেবা পাওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। এর ফলে যাত্রীরা বৃষ্টির সময় রাস্তায় দাঁড়িয়ে বা চায়ের দোকানে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন। এমন অবস্থায় দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয় যাত্রীদের, যা তাদের জন্য অত্যন্ত অস্বস্তিকর হয়ে ওঠে।
খেয়াঘাট পরিচালনাকারী বিভিন্ন ইজারাদাররা বলেছেন, তারা খেয়া পারাপারের জন্য ঘাটের উন্নয়ন ও যাত্রীদের সুবিধার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার আবেদন জানিয়ে আসছেন। তারা চান, বর্ষাকালে যাত্রীদের জন্য নিরাপদ এবং সঠিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা হোক, যাতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমানো যায়।
এছাড়া, বরগুনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আলম জানিয়েছেন, খেয়াঘাটগুলোর উন্নয়নের জন্য কাজ দ্রুত শুরু হবে। মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পাওয়ার পর, সেসব ঘাটে যাত্রীদের সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য টেন্ডারের মাধ্যমে উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালিত হবে। যেসব যাত্রীছাউনি বেদখল হয়েছে, সেগুলো উদ্ধারের জন্যও আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মো: তুহিন হোসেন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম