বরিশাল অফিস :: নির্মাণের পর দীর্ঘ বছরেও সংস্কার না করায় বরগুনায় ২৪৫টি লোহার সেতু ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। বিকল্প পথ না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়েই ঝুঁকিপূর্ণ এসব সেতু পার হচ্ছে যানবাহন ও স্থানীয় অধিবাসীরা। এতে ঘটছে দুর্ঘটনাও। সম্প্রতি আমতলীতে সেতু ভেঙে ৯ জন নিহতের ঘটনায় টনক নড়েছে কর্তৃপক্ষের।
একই প্রকল্পের আওতায় ২০০৮ সালে বরগুনার আমতলী উপজেলায় আউয়াল নগর সেতুটি নির্মাণ করে। এরপর গত ১৬ বছরে একবারের জন্যও সংস্কার করা হয়নি সেতুটি। এ কারণে সেতুটির একপাশ ডেবে যাওয়ার পাশাপাশি মরিচা ধরে নষ্ট হয়ে গেছে লোহার অ্যাঙ্গেল। বিভিন্ন স্থানে ভেঙে গেছে লোহার খুঁটিও। যানবাহন তো দূরের কথা, সাধারণ মানুষ হাঁটলেও ঝাঁকুনি দেয় সেতুটিতে। তারপরও বিকল্প পথ না থাকায় ঝুঁকি নিয়েই সেতু পার হচ্ছে যানবাহন। এমন অবস্থা বরগুনায় দুই শতাধিক লোহার সেতুর। এসব সেতুর অধিকাংশতে নেই ঝুঁকিপূর্ণ লেখা সাইনবোর্ড।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সেতু নির্মাণে অনিয়ম ও সংশ্লিষ্টদের গাফিলতির কারণেই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীর। সেতু ভেঙে গেলে সেটার আর খোঁজই নেন না কর্তৃপক্ষ। এতে বাড়ছে মৃত্যু ঝুঁকি। গত দুই বছরে জেলায় ৭টি সেতু ধসে মারা গেছেন ৯ জন। তারপরও সেতু সংস্কার কিংবা পুনর্নির্মাণের জন্য টনক নড়ছে না কর্তৃপক্ষের।
বরগুনা এলজিইডি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বরগুনা জেলার ছয় উপজেলায় এখন পর্যন্ত ২৪৫টি ঝুঁকিপূর্ণ লোহার সেতু শনাক্ত করা হয়েছে। আমতলী উপজেলায় ৯৯টি, তালতলী উপজেলায় ২৮টি, বরগুনা সদর উপজেলায় ৬১টি, বামনা উপজেলায় ২৫টি, বেতাগী উপজেলায় ১৬টি ও পাথরঘাটা উপজেলায় ১৬টি ঝুঁকিপূর্ণ সেতু রয়েছে। তবে এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
এ বিষয়ে বরগুনা এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মেহেদী হাসান খান বলেন, এ পর্যন্ত বরগুনা জেলায় ২৪৫টি ঝুঁকিপূর্ণ সেতুর তালিকা করা হয়েছে। এখনো এ সংখ্যা বাড়তে পারে। এগুলোর মধ্যে কতগুলো সংস্কার ও পুনর্নির্মাণ সেটা নির্ণয় করে বাজেট আকারে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। এরপর বরাদ্দ পেলে ঝুঁকিপূর্ণ সেতু সংস্কার ও পুনর্নির্মাণ করা হবে।