বরিশাল অফিস :: বাকেরগঞ্জ উপজেলার সীমানায় নিয়ামতি ইউনিয়নের খাশ মহেশপুর গ্রামে ভাড়ানিখালের ওপর নড়বড়ে সাঁকোটি পার্শ্ববর্তী উপজেলা বেতাগীর বিবিচিনি গ্রামের সঙ্গে সংযোগ হয়েছে। দুই উপজেলার সঙ্গে সংযোগ সাঁকোটির কঙ্কাল এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। গত ১৬ বছর ধরে সাঁকোটি দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। সাঁকোটিতে দীর্ঘ ২৩ বছরেও সংস্কারের ছোঁয়া লাগেনি। চরম দুর্ভোগে রয়েছে দুই উপজেলার হাজারো মানুষ। ঘটছে প্রায়ই দুর্ঘটনা।
জানা গেছে, সাঁকোর দক্ষিণপাশে ডিসিরবাজার, বেগম লুৎফুন্নেছা ব্রিট মেমোরিয়াল স্কুল, দেশান্তরকাঠী খ্রিস্টান পল্লি, মিশনারি স্কুল, একাধিক মাদ্রাসা ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। অপরদিকে উত্তরপারে মহেশপুর কমিউনিটি ক্লিনিক, ডোরখালী দাখিল মাদ্রাসা ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রতিদিন শত শত শিক্ষার্থী, কৃষক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো পার হচ্ছে। বিশেষ করে কমিউনিটি ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। সাঁকো পারাপারে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয় প্রসূতিদের। তা ছাড়া সাঁকোর একদম সন্নিকটেই রয়েছে একটি জামে মসজিদ। স্থানীয় কৃষকরাও তাদের উৎপাদিত পণ্য ও ব্যবসায়ীদের মালামাল মাথায় করে বাজারে নিতে-আনতে চরম কষ্টে ভোগেন।
স্থানীয়রা জানায়, ২০০১ সালে সাঁকোটি বেতাগী এলজিইডি নির্মাণ করে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে একটি নড়বড়ে সাঁকো নির্মাণ করে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় এমন সাঁকো নির্মাণ হলে ২০০৭ সালে সিমেন্টের ঢালাই দেওয়া স্লিপারের বেশিরভাগই খালে ভেঙে পড়ে। অথচ দেড়যুগ পার হলেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সাঁকোটি সংস্কার ও নতুন করে নির্মাণের কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না। নিরুপায় হয়ে স্থানীয়রা সাঁকোটির ওপর সুপারিগাছ ও বাসের সাঁকো নির্মাণ করে চলাচল করছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রায় ৫০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১০ ফুট প্রস্থ নড়বড়ে ও ভেঙে যাওয়া সাঁকোর সিমেন্টের ঢালাই দেওয়া স্লিপারগুলো ভেঙে গেছে। ক্রস এ্যাঙ্গেলগুলো মরিচা ধরে ভেঙে গিয়ে সাঁকোটি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। মানুষ নিরুপায় হয়ে সাঁকো দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। এমন পরিস্থিতিতে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা।
বাকেরগঞ্জ এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের মিয়া জানায়, গুরুত্বপূর্ণ এই সাঁকোটি নির্মাণে প্রকল্প প্রস্তাবিত আছে। বরাদ্দ সংকটে সাঁকো সংস্কার হচ্ছে না। অপরদিকে বেতাগী উপজেলা এলজিইডি কর্তৃপক্ষ জনকণ্ঠকে জানান, সাঁকোটি বেতাগী উপজেলার আওতায় কিনা আমার ভালো জানা নেই। সরেজমিন পরিদর্শন করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।