বরিশাল অফিস: দূর থেকে দেখে মনে হবে যেন লাল গালিচা বিছানো। কাছ থেকে দেখলে মনে হবে শাপলার রাজ্য। লাল রঙের শাপলায় মোড়ানো পুরো বিল। সবুজ পাতার ফাকে থরে থরে ফুটে আছে লাল শাপলা। যতদূর চোখ যায় বিল জুড়ে প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য। লাল সবুজের এই চিত্র মনে করিয়ে দেয় বাংলাদেশের প্রকৃত রূপ। প্রতিদিন দূর দূরান্ত থেকে দর্শনার্থী আসেন বিস্তীর্ণ বিলের পানিতে ফুটে থাকা শাপলা দেখতে।
বরিশালের উজিরপুর উপজেলার সাতলা ইউনিয়নে এই বিলের অবস্থান। প্রতি বর্ষায় লাল শাপলা ফুলেরা রাজত্ব করে এই বিলে। নগরী থেকে সড়ক পথে ৬৭ কিলোমিটার দূরে এই শাপলা বিল। প্রায় ১০ হাজার একর জলাভূমিতে বছরজুড়ে শাপলা ফুল ফোটে। প্রকৃতির এই অপরূপ সাজ দেখতে দেশের নানান প্রান্ত থেকে পর্যটক আর প্রকৃতি প্রেমীরা ছুটে আসেন এখানে।
জুলাই থেকে শুরু করে অক্টোবর পর্যন্ত শাপলার সমারোহ বেশি থাকে। এই চার মাস সাতলার বিল লাল শাপলায় ভরপুর থাকে। এটাই সেখানে বেড়াতে যাওয়ার ভালো সময়। রাতে ফোটা শাপলা ধীরে ধীরে ঘুমিয়ে পড়ে রোদে। শাপলার সৌন্দর্য উপভোগ করতে যেতে হবে সূর্য প্রখর হওয়ার আগে। ভোর থেকেই ছোট ছোট নৌকায় করে বিলে ঘুরে বেড়ায় প্রকৃতি প্রেমীরা।
আবির নামে এক পর্যটক জানান, প্রকৃতির সৌন্দর্য ফুটেছে পুরো এলাকাজুড়ে। এমন দৃশ্য দেখতে বার বার ছুটে আসব। নওরিন নামে আরেক পর্যটক জানান, ফেসবুকে অনেক ছবি দেখেছি। তাই ঘুরে দেখতে চলতে আসলাম। ভালো লেগেছে বার বার ঘুরতে আসব। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি পর্যটন করপোরেশনের নির্মাণাধীন বিশ্রামাগারটি চালু হলে পর্যটন নগরীতে পরিণত হবে এই অঞ্চল।
তবে রাস্তা সংস্কার না হওয়া আর পর্যটকদের জন্য বিশ্রামাগার করা হলেও এখন তা উন্মুক্ত না করায় ক্ষোভের শেষ নেই মাঝি ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের। তবে পর্যটকদের কথা মাথায় রেখে উন্নয়ন কাজ দ্রুত করা হবে বলে দাবি জেলা প্রশাসনের।
শাপলা বিল মাঝি সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফাইজুল মিয়া বলেন, বিলে নামার জন্য ঘাটলা নেই। এখনো কার্যক্রম শুরু হয়নি বিশ্রামাগারটি। এছাড়া যাতায়াতের একমাত্র রাস্তাটির অবস্থাও বেহাল। এসবের উন্নয়ন হলে এই অঞ্চল হবে পর্যটন নগরী।
জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম জানান, বরাদ্ধ পেলে বিলকে কেন্দ্র করে গড়ে তোলা বিশ্রামাগার ও ঘাটের উন্নয়ন করা হবে। এছাড়া আশপাশের সড়ক সংস্কারে সংশ্লিষ্ট মহলের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।