বরিশাল সদর উপজেলা শায়েস্তাবাদ ইউনিয়ন থেকে মেহেন্দিগঞ্জ-পাতারহাট নৌপথে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করে। যদিও এই অঞ্চলের প্রধান বাহন হিসেবে লঞ্চ ব্যবহার করা হয়, তবে অধিকাংশ যাত্রী সময়ের অভাবে স্পিডবোটে যাতায়াত করেন।
তবে, এই নৌপথে চলাচলরত ৫০ থেকে ৫৫টির অধিক স্পিডবোটের একটিরও বিআইডব্লিউটিএ’র লাইসেন্স নেই, যার ফলে এই স্পিডবোটগুলো অবৈধ এবং ফিটনেস বিহীন। বেশিরভাগ বোটে দক্ষ চালকও নেই, যা যাত্রীদের জন্য বিপজ্জনক। যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
জানা গেছে, বর্তমানে বরিশাল-মেহেন্দিগঞ্জ-পাতারহাট রুটে অর্ধশতাধিক স্পিডবোট চলাচল করছে, এবং এগুলোর কোনো লাইফ জ্যাকেট নেই বা তা ব্যবহারের উপযোগী নয়। এসব বোটে যাত্রীদের জীবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। যাত্রীরা প্রতিবাদ করলে স্পিডবোট চালকরা দুর্ব্যবহার করেন, তাই ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করেন না।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিআইডব্লিউটিএ’র নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে এই অবৈধ স্পিডবোটগুলো চলাচল করছে এবং প্রশাসন একাধিকবার সতর্ক করা সত্ত্বেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। অভিযোগ উঠেছে, স্পিডবোট মালিক সমিতির নেতারা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে অবৈধভাবে স্পিডবোট চালাচ্ছেন।
এছাড়া, অবৈধ স্পিডবোট ঘাটে স্থানীয় দোকানদারদের সাথে চাঁদাবাজি করার অভিযোগও উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, নদী ও বাঁধের ক্ষতির জন্য এই অবৈধ স্পিডবোটগুলো দায়ী। অবৈধভাবে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে এবং এর ফলে নদীর পরিবেশও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শায়েস্তাবাদ স্পিডবোট ঘাটে কোনো কমিটি বা লাইনম্যান নেই। যাত্রীদের কাদা পানি পার করে বোটে উঠতে হয়, যা তাদের জন্য দুর্ভোগ সৃষ্টি করছে। এসব সমস্যা মোকাবেলা করার জন্য প্রশাসনের কাছে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি উঠেছে।
এ বিষয়ে বরিশাল অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) উপ-পরিচালক মো: আব্দুর রাজ্জাক বলেন, স্পিডবোটগুলো অবৈধভাবে চলাচল করছে এবং এর জন্য প্রশাসনকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এই স্পিডবোটগুলোর লাইসেন্স না থাকায় সেগুলোর বন্ধের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে তৎপর হতে বলা হয়েছে।
অবশেষে, প্রশাসন যদি দ্রুত কোনো কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে যাত্রীদের জীবনের ঝুঁকি আরো বৃদ্ধি পাবে।
মো: তুহিন হোসেন,
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম