বরিশাল গণপূর্ত বিভাগের কর্মকর্তাদের মধ্যে অনেকেই সরকারি চাকরি পেয়ে কোটিপতি বনে গেছেন। বিশেষ করে উপ সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুনের নাম শোনা যাচ্ছে সর্বাধিক। তিনি ২০১০ সালে চাকরিতে যোগদান করার পর মাত্র ১৫ বছরে নিজের জন্য গড়ে তুলেছেন বিপুল সম্পদ। সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে মাসিক বেতন ৫০ হাজার টাকারও কম হলেও, তার মালিকানাধীন সম্পদ এখন কয়েক কোটি টাকার ওপরে পৌঁছেছে। তিনি নগরীর বাংলাবাজার এলাকায় ৭৫০০ বর্গফুট জমির ওপর একটি ৬ তলা বিলাসবহুল বাড়ি তৈরি করেছেন, যা নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১০ কোটি টাকা।
এছাড়া, তার গ্রাম বাড়ি বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলার গুলিশাখালীতে রয়েছে ৩ তলা বিশিষ্ট একটি মার্কেট। কুয়াকাটায় নির্মাণ করেছেন একটি বিলাসবহুল হোটেল। পটুয়াখালীর পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র এলাকাতেও তিনি কয়েক কোটি টাকার জমি কিনেছেন। তার স্ত্রীর ও সন্তানদের গাড়ির দাম ৩০ লাখ টাকার বেশি। মামুনের স্কুলশিক্ষক বাবা আব্দুল হক মিয়া আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত, এবং তার চাচা গুলশাখালী ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সভাপতি।
এভাবে শুধু আব্দুল্লাহ আল মামুনই নয়, বরিশাল গণপূর্ত বিভাগের বেশিরভাগ কর্মকর্তারাই বিলাসী জীবনের মালিক। উপ সহকারী প্রকৌশলী বিধান চন্দ্র মজুমদার, ইউসুফ আলী, কামাল হোসেন হাওলাদার, মনিরুল ইসলাম ও অন্যান্যরা যারা সরকারি বেতন থেকে কোটি টাকার সম্পদ বানিয়েছেন।
বিশেষ করে, বিধান চন্দ্র মজুমদার নগরীর গাজী মিলনায়তের পাশে একটি ৯ তলা বিলাসবহুল ভবন তৈরি করেছেন, যার নির্মাণ ব্যয় ১৫ কোটি টাকার বেশি। কামাল হোসেন হাওলাদার ৬ তলা ভবন তৈরি করেছেন মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দীন সড়কে, এবং মনিরুল ইসলামও কয়েক কোটি টাকার ৫ তলা ভবন গড়েছেন কাউনিয়া বিসিক এলাকায়।
এখন প্রশ্ন উঠছে, কীভাবে এই কর্মকর্তারা এত সম্পদ অর্জন করলেন, যখন তাদের বেতন সামান্য এবং সরকারের সঙ্গে কোনো সম্পর্কিত কাজের টাকা কিভাবে এসেছে তা নিয়ে সন্দেহের সৃষ্টি হচ্ছে। এসব কর্মকর্তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তারা ফোন ধরেননি এবং অফিসে গিয়ে কথা বলার সময় সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর তারা সটকে পড়েন।
মো: তুহিন হোসেন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম