বরিশাল অফিস:: ফেসবুক পেজ-গ্রুপের মাধ্যমে তরুণ-তরুণীদের বিপথগামী করার পাশাপাশি তাদের ব্ল্যাকমেইলের অভিযোগে আবু বক্কর (১৯) নামে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার (২১ এপ্রিল) রাতে বরিশাল নগরের কাশিপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। রোববার বিকেলে বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) আলী আশরাফ ভূঞা।
তিনি জানান, আবু বকরের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছে। অন্য যারা মামলা দিতে চান, তারা পরিচয় গোপন রাখার শর্ত দিয়েছেন।
উপ-পুলিশ কমিশনার বলেন, আবু বকরকে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে অপরাধ ঘটানোর লক্ষ্যে তৈরি পেজ-গ্রুপগুলো বন্ধ হবে, এটিই মূল কথা। এ ধরনের পেজ-গ্রুপ যদি আরও কেউ পরিচালনা করে থাকেন, তারা সতর্ক হোন, কারণ আইনের আওতায় আসতে হবে।
গ্রেপ্তার আবু বক্কর বরিশাল সিটি করপোরেশনের ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের বারৈজ্জারহাট এলাকায় থাকেন। তিনি পটুয়াখালীর দশমিনার রনগোপালদী গ্রামের হেলাল গাজীর ছেলে।
উপ-পুলিশ কমিশনার আলী আশরাফ বলেন, আবু বক্কর একাধিক পেজ-গ্রুপের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে তরুণীদের অসামাজিক কার্যক্রমে যুক্ত করতেন। তরুণীদের ছবি ও বাজে তথ্য পেজগুলোতে দিতেন। এসব দেখে ওই তরুণীদের সঙ্গে তরুণরা আবু বক্করের নির্ধারিত স্থানে টাকার বিনিময়ে অসামাজিক কাজে লিপ্ত হতেন।
তিনি বলেন, ব্যক্তিগত সময়ের স্পর্শকাতর ভিডিও ধারণ শেষে আবু বক্কর সহযোগীদের নিয়ে তরুণ তরুণীদের ব্ল্যাকমেইল করতেন। ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়াসহ পরিবারের সদস্যদের কাছে পাঠিয়ে দেওয়ার ভয় দেখাতেন তারা।
এরপর ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে মোটা অংকের চাঁদা আদায় করতেন আবু বক্করসহ সহযোগীরা। বিষয়টি পুলিশের নজরে এলে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পেজ-গ্রুপগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এসব ফাঁদে পা না দিতে সচেতন থাকার আহ্বান জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) ফজলুল করিম, সহকারী পুলিশ কমিশনার (কোতোয়ালি থানা) নাফিছুর রহমান, সহকারী পুলিশ কমিশনার (স্টাফ অফিসার) প্রণয় রায় প্রমুখ।
সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন, বরিশালের সহ-সভাপতি রনজিৎ দত্ত বলছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের নানা ভালো দিক থাকলেও তরুণরা এর খারাপ দিকের সঙ্গে জড়িয়ে যাচ্ছেন। ফলে বাড়ছে আত্মহত্যার প্রবণতা, যেটি রীতিমতো ভয়ের কারণ। অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে।
জানা গেছে, বরিশাল নথুল্লাবাদ হোটেল নামে ২৫ হাজার সদস্যের একটি গ্রুপ খোলেন আবু বকর। সেখানে নানা ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাতেন তিনি। টাকার বিনিময়ে নগরের বিভিন্ন হোটেলে চালানো হতো এসব অপকর্ম। আবু বক্করের ১০-১২ জন সহযোগী রয়েছেন। তাদের ধরতেও পুলিশি অভিযান চলছে।