বরিশাল-ভোলা নৌরুটে চলাচলকারী স্পিডবোটে যাত্রীদের জন্য লাইফ জ্যাকেটের ব্যবস্থা ছিল না, এমন অভিযোগ উঠে এসেছে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও যাত্রীদের কাছ থেকে। সম্প্রতি, ৫ ডিসেম্বর ভোলা থেকে আসা একটি স্পিডবোট ও বাল্কহেডের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৫ জনের প্রাণহানি ঘটে। এই দুর্ঘটনার পরই প্রশাসন কার্যক্রমে তৎপর হয় এবং স্পিডবোট চালকরা এখন থেকে যাত্রীদের জন্য লাইফ জ্যাকেট সরবরাহ করতে শুরু করেছে।
ভোলা জেলার বাংলাবাজার এলাকার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যবসায়ী শাখাওয়াত হোসেন বলেন, “আমি প্রায় প্রতিদিনই এই রুটে স্পিডবোটে যাতায়াত করি, কিন্তু কখনোই যাত্রীদের জন্য লাইফ জ্যাকেটের ব্যবস্থা দেখিনি।” অন্যদিকে, ভোলার আরেক যাত্রী জুথি আক্তার জানান, তিনি প্রতিনিয়ত এই রুটে যাতায়াত করেন এবং আগেও লাইফ জ্যাকেটের কোনো ব্যবস্থা ছিল না। তবে এখন কিছুটা স্বস্তি এসেছে, কারণ চলতি সপ্তাহ থেকে লাইফ জ্যাকেট সরবরাহ শুরু হয়েছে।
স্থানীয় যাত্রীদের দাবি, স্পিডবোট চালকরা ভাড়া দ্বিগুণ বাড়িয়েছেন, কিন্তু তারা বলেন, “যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য লাইফ জ্যাকেটের ব্যবস্থা করা হোক।”
প্রশাসনিক উদ্যোগের পর, নৌপরিবহণ অধিদপ্তর ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে। তদন্তে জানা গেছে, দুর্ঘটনার শিকার স্পিডবোট ও বাল্কহেডের বৈধ কোনো কাগজপত্র ছিল না এবং স্পিডবোট চালক ছিল অপ্রাপ্তবয়স্ক, যার কোনো লাইসেন্সও ছিল না।
বরিশাল জেলা স্পিডবোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অহিদুল আলম বলেন, “স্পিডবোটে লাইফ জ্যাকেট রাখা হলেও, অনেক যাত্রী তা পরতে চান না। তবে এখন থেকে লাইফ জ্যাকেট ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “বরিশাল প্রান্ত থেকে ২৯টি বৈধ স্পিডবোট চলাচল করছে, যেখানে সকল কাগজপত্র ও লাইসেন্স নিশ্চিত করা হয়েছে।”
এ ব্যাপারে কোস্টগার্ড বরিশালের কন্টিনজেন্ট কমান্ডার মতিউর রহমান জানান, “সব স্পিডবোট মালিক ও চালকের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে এবং পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) বরিশালের যুগ্ম পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “দুর্ঘটনা রোধে স্পিডবোট মালিক ও চালকদের সচেতন করা হয়েছে এবং যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে লাইফ জ্যাকেট বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এর কোনো ধরনের অমান্যকারীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
মো: তুহিন হোসেন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম