বরিশাল অফিস :: দেশের দক্ষিণাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ ভোলা-বরিশাল-লক্ষ্মীপুর নৌরুটে দীর্ঘদিন ধরে নাব্যতা সংকট ভোগাচ্ছিল যাত্রী ও নৌযান শ্রমিকদের। বিআইডব্লিউটিএ (বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ) এই নৌপথের নাব্যতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে অবশেষে ড্রেজিং কার্যক্রম শুরু করেছে।
বিআইডব্লিউটিএ সূত্র জানায়, ২০০৬ সালে এই নৌরুটে প্রথম তিনটি ফেরি সার্ভিস চালু করা হয়। বরিশাল থেকে ভোলা হয়ে লক্ষ্মীপুর পর্যন্ত প্রায় ২৬ কিলোমিটারের এই পথটি দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার সঙ্গে ভোলার যোগাযোগের একমাত্র প্রধান মাধ্যম। শুষ্ক মৌসুমে মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে পানির স্তর কমে যায়, যার ফলে বেশ কিছু এলাকায় ডুবোচর সৃষ্টি হয়। এতে ফেরি ও লঞ্চ চলাচলে সমস্যা হয় এবং যাত্রীরা পড়েন সীমাহীন দুর্ভোগে।
এই নৌরুটে প্রায় ১৫-২০টি ডুবোচর জেগে উঠায় সাধারণত তিন ঘণ্টার পথ এখন পার হতে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা সময় লাগছে। এতে শুধু সময়ের অপচয় নয়, অতিরিক্ত তেলের খরচও বাড়ছে।
কৃষাণী ফেরির মাস্টার আতিকুর রহমান জানান, ডুবোচরের কারণে ২৬ কিলোমিটার পথ ঘুরে ৩৬ কিলোমিটার পাড়ি দিতে হচ্ছে, ফলে অতিরিক্ত সময় ও খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভাটার সময় পানির স্তর মাত্র চার ফুট থাকায় ফেরিগুলোকে নানা পথে ঘুরে যেতে হচ্ছে।
দীর্ঘদিনের এই দুর্ভোগ দূর করতে বিআইডব্লিউটিএ ড্রেজিং কার্যক্রম শুরু করেছে। ভেদুরিয়া এলাকায় ড্রেজিং কার্যক্রম ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে এবং অন্যান্য ডুবোচর এলাকাতেও ড্রেজিং হবে বলে জানিয়েছেন বিআইডব্লিউটিএ ভোলা অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মো. শহিদুল ইসলাম। ডুবোচরগুলো অপসারণ হলে যাত্রী ও নৌযান চলাচলে আর কোন সমস্যা থাকবে না বলে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন।
বিআইডব্লিউটিসির বরিশাল লাহারহাট অঞ্চলের ব্যবস্থাপক সিহাব উদ্দিন জানান, নাব্যতা সংকট নিরসন হলে ফেরি সংখ্যা আরও বাড়ানো সম্ভব হবে, যার ফলে সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে। বর্তমানে বরিশাল-ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটে আটটি ফেরি চালু আছে। ডুবোচর সংকটের সমাধান হলে এই সংখ্যা বাড়িয়ে জনগণের যাতায়াত আরও সহজ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএ ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এ উদ্যোগে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে।