শিরোনাম

বরিশালে ফাল্গুনী হাওয়ায় শিমুল গাছে আগুনের ফুলকি

Views: 66

এস এল টি তুহিন, বরিশাল :: বাংলার প্রকৃতিতে শুরু হয়েছে বসন্ত। ফাগুনের আগুন মানেই যেন শিমুল ফুল। দখিনের গ্রামীন জনপদ ও মাঠ-ঘাট জুড়েই শিমুল ফুল তার লাল পাপড়ি মেলে সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে।

বরিশালের বিভিন্ন গ্রামের আঞ্চলিক মহাসড়কের দু’পাশে সারিবদ্ধ গাছের দিকে দূর থেকে হঠাৎ তাকালে মনে হবে কেউ যেন লাল গালিচা বিছিয়ে রেখেছেন। নিঃসঙ্গ পথের পাশে শিমুলের গাছ যেন অনন্য সৌন্দর্য। গাছজুড়ে টকটকে লাল শিমুল ফুল।

যেন প্রতিটি গাছের ডগায় ডগায় আগুনের ফুলকি জ¦লছে। শিমুলের সুবাস না থাকলেও সৌন্দর্যে অবশ্যই প্রকৃতিপ্রেমীদের নজর কাড়বে। পাখপাখালি আর মৌমাছিদের আনাগোনা চোখে পড়ার মত দৃশ্য। আর যেকোনো পথচারীকে দাঁড়িয়ে দেখতে বাধ্য করবেই।

তবে কালের বির্বতনে অপরূপ সাজ সজ্জিত শিমুল গাছ ও ফুল প্রায় বিলুপ্তির পথে। ফাল্গুনের শুরুতেই গাছে গাছে সীমিত আকারে ফুল ফুটছে। প্রকৃতির রূপ লাবণ্যে শিমুল ফুল সব গাছে এখনো ফোটেনি। প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো শিমুল গাছ থেকে প্রাপ্ত তুলা দিয়ে লেপ-তোষক ও বালিশ বানানো হয়। এগুলো ব্যবহার যেমন আরামদায়ক তেমন স্বাস্থ্যসম্মত। শিমুল গাছ সংরক্ষণে সরকারিভাবে কোনো কার্যক্রম নেই। জনসচেতনতার অভাবে ক্রমেই হারিয়েই যাচ্ছে শিমুল গাছ।

স্থানীয় পথচারিরা বলেন হঠাৎ করে যদি দ‚র থেকে শিমুল গাছের দিকে তাকানো যায়, মনে হবে লাল গালিচা বিছানো। ওই দৃশ্য চোখে পড়লে যে কেউ মুগ্ধ হতে বাধ্য। গ্রামের
আনাচে-কানাচে রাস্তার পাশে শত বছরের অসংখ্য শিমুল গাছ চোখে পড়তো। আর ফাল্গুন মাসে এসব শিমুল গাছে গাছে শিমুল ফুলের সমারোহ জানান দিতো, যে বসন্তকাল
এসে গেছে এখন শিমুল গাছ চোখে পড়ে না। কালের আবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ এই ঐতিহ্য।

বরিশালের পরিবেশবিদ ব্যাক্তিরা বলেন, ‘ছোট বেলা দেখতাম অমর ২১ শে ফেব্রæয়ারি এলে শহীদ মিনারে ফুল দেওয়ার জন্য শিশু-কিশোরদের ফুলের সংকট দেখা যেতো। ফুল না পেয়ে শৈশবে অনেকেই লাল টকটকল শিমুল ফুল দিয়ে ফুলের তোড়া বানিয়ে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতো। আজকাল শিশুরা শিমুল গাছ ও ফুলটি চেনে না। একদিকে শিমুল গাছ বিলুপ্তির কারণে সাধারণ মানুষ বঞ্চিত হচ্ছে স্বাস্থ্যসম্মত তুলা থেকে। শিমুলগাছ সংরক্ষণে দেশের কৃষিবিভাগ কর্মস‚চি নেওয়া উচিত বলে মনে করেন তারা।

এদিকে নির্বিচারে শিমুলগাছ নিধন ও চারা রোপণ না করার কারণে এ অঞ্চল থেকে শিমুল গাছ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে বলে মনে করছেন কৃষি বিশ্লেষকরা। এ ব্যাপারে সরকারি নজরদারি বাড়ানো আহ্বান জানান তারা।

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *