বরগুনার আমতলীর গুলিশাখালী ইউনিয়নের কলাগাছিয়া গ্রামের বিকাশ ব্যবসায়ী কাসেম (২২) হত্যা মামলার তিন মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো কোনো সঠিক সমাধান পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় কাসেমের পরিবার এবং স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। কাসেমের মা রাহিমা বেগম হত্যাকারীদের বিচার না পেলে ছেলের কবরের পাশে আত্মহত্যা করার হুমকি দিয়েছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, কাসেম ২৬ সেপ্টেম্বর রাত সোয়া ৯টার দিকে খুন হন। তার লাশ বাড়ির পাশের দোয়াচারা খালের পাড়ের ধানক্ষেতে পাওয়া যায়। কাসেম পটুয়াখালী সরকারি কলেজের বোটানির দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন এবং বিকাশ ব্যবসায়ী হিসেবে কাজ করতেন। ময়নাতদন্ত শেষে ২৮ সেপ্টেম্বর তার লাশ দাফন করা হয়।
গুরুতর আহত কাসেমকে দেখেছিলেন নূর মহম্মদ মোল্লা, যিনি জানান, কাসেমের ঘাড়ে পিছন থেকে কোপ দেওয়া হয়েছিল, যা তার ঘাড়ের অধিকাংশই কেটে ফেলেছিল। তার মাথা, হাত এবং পিঠে একাধিক কোপের চিহ্ন ছিল।
নিহতের বাবা নুর উদ্দিন মোল্লা ২৮ সেপ্টেম্বর আমতলী থানায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। তবে, মামলার তিন মাস পার হলেও পুলিশের কোনো সঠিক পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। ঘটনার পর দুইজনকে আটক করা হলেও, তাদের কাছ থেকে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। আটক দুইজন চলতি মাসের ১৯ তারিখ জামিনে মুক্তি পেয়ে বেরিয়ে আসেন।
এদিকে, কাসেম হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিচার দাবিতে এলাকাবাসী সোচ্চার হয়ে উঠেছে। ৩০ নভেম্বর কলাগাছিয়া বাজারে শত শত লোক মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে, যাতে কাসেম হত্যাকারীদের কঠোর বিচার দাবি করা হয়।
নিহত কাসেমের মা রাহিমা বেগম কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “মোর পোলাডারে মাইর্যা খুনিরা ব্যামালা টাহা নিয়া গ্যাছে। পোলাডারে ক্যারা মারছে, এহনো মোরা জানতে পারি নাই। অরে যারা মারছে, হেগো বাইর কইর্যা ফাঁসির দাবি জানাই। মোর পোলার খুনিদের বাইর করতে না পারলে এবং বিচার না হলে মুই আগামী ঈদেরও আগে মোর পোলার কবরের পাশে গলায় দড়ি দিয়া মইর্যা যামু।”
আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, “কাসেম হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করার কাজ চলছে। আশা করি আমরা দ্রুত এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের খুঁজে বের করতে পারবো।”
মো: তুহিন হোসেন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম