বরিশালের মানবপাচার ট্রাইব্যুনাল মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) তিনজনের বিরুদ্ধে মানবপাচার আইনের দুটি ধারায় রায় ঘোষণা করেছেন। রায়ে দুই ভাই এবং তাদের ভাবীকে পৃথক কারাদণ্ড এবং জরিমানা দেওয়া হয়েছে।
দণ্ডিতরা হলেন বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার রাহুতকাঠি এলাকার কাতার প্রবাসী জসিম উদ্দীন হাওলাদার, তার স্ত্রী জান্নাতুর রহমান যূথী, এবং ছোট ভাই ভানুয়াতু প্রবাসী পলাশ হাওলাদার।
জসিম উদ্দীন হাওলাদার এবং পলাশ হাওলাদার দুই ভাইকে মানবপাচার আইনের ৬ ধারায় ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ২০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড, এবং ৭ ধারায় **জসিম উদ্দীনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ২৫ লাখ টাকা জরিমানা দেওয়া হয়েছে।
জান্নাতুর রহমান যূথী তাকে ৬ ধারায় ৭ বছরের কারাদণ্ড, ৫ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ৬ মাসের কারাদণ্ড, এবং ৭ ধারায় ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ৫ লাখ টাকা জরিমানা দেওয়া হয়েছে। জরিমানা ভুক্তভোগীদের ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মামলার বাদী, বরিশালের উজিরপুর উপজেলার মোফাজ্জেল হোসেন জানান, তিনি ও সজল জমাদ্দার একই এলাকায় ব্যবসা করতেন। সজল তার খালাতো ভাই পলাশ হাওলাদার এর মাধ্যমে কিউবা যাওয়ার প্রস্তাব দেন এবং মোফাজ্জেলও সজলের মাধ্যমে পলাশ ও তার ভাই জসিম উদ্দীন এর কাছে ২১ লাখ টাকা জমা দেন। এরপর ২০১৭ সালে কলকাতা, দিল্লি, সিঙ্গাপুর ও ফিজি হয়ে ভানুয়াতু পৌঁছানোর পর তাদেরকে আটকে রাখা হয়। পরে, অস্ট্রেলিয়ায় নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আরও ৭ লাখ টাকা দাবি করা হয়, কিন্তু অস্ট্রেলিয়া পাঠানো হয়নি।
ভানুয়াতুতে প্রায় ১০ জনকে আটক রেখে অর্ধাহারে-অনাহারে থাকতে বাধ্য করা হয়। পরে পুলিশ এসে **পলাশ** ও তার সহযোগীদের গ্রেপ্তার করে। দেশে ফিরে আসার পর টাকা ফেরত চাওয়ার চেষ্টা করা হলে আসামিরা তা ফেরত দিতে অস্বীকার করেন এবং খুন-জখমের হুমকি দেন।
মামলার রায় ঘোষণার পর বাদী মোফাজ্জেল হোসেন বলেন, “যদি রায় কার্যকর হয়, তবে আমি খুশি হব।” অপরদিকে, আসামিপক্ষের আইনজীবী **আব্দুল মান্নান** জানিয়েছেন, তারা রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন।
মো: তুহিন হোসেন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম