বরিশাল অফিস : ৬ষ্ঠী পূর্জার মধ্য দিয়ে আজ থেকে শুরু হয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। আর এ উৎসবকে নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে পালন করার লক্ষ্যে মাঠে কাজ শুরু করেছে র্যাব-৮।
র্যাব-৮ এর সদর দপ্তর থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়েছে- ঝুঁকিপূর্ণ ও গুরুত্বপূর্ণ পূজামন্ডপসহ সকল শারদীয় দূর্গাপূজায় পূজা মন্ডপের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বরিশাল, ঝালকাঠি, পিরুজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, মাদারীপুর ও শরিয়তপুরসহহ ৮ জেলার সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে র্যাব-৮। অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি র্যাবও মোবাইল এবং স্ট্রাইকিং রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে নিরাপত্তা দায়িত্ব পালন করবে। পূজাকে কেন্দ্র করে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহসহ বৃদ্ধি করা হয়েছে র্যাবের তৎপরতা ও নজরদারি। যে কোন ধরণের নাশকতা এড়ানোর লক্ষ্যে র্যাব-৮ সার্বিকভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
পূজামন্ডপকে ঘিরে সার্বিক নিরাপত্তায় প্রতিনিয়ত র্যাবের পেট্রোলিং এবং সাদা পোষাকে গোয়েন্দা নজরদারি চলমান থাকবে। এছাড়াও বাড়তি নজরদারিসহ প্রস্তত থাকবে র্যাব স্ট্রাইকিং ফোর্স। এরই পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পূজাকেন্দ্রিক যেকোনো গুজব এড়াতে ও পূজামন্ডপে নারী দর্শনার্থীদের ইভটিজিং রোধে জোরদার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
পূজাস্থলে নিয়োজিত অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং পূজা উদযাপন কমিটির সঙ্গে র্যাবের নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। সকলের সঙ্গে সমন্বয় করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সাজানো হয়েছে, যাতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয়। যদি এমন কোনো পরিস্থিতির উদ্ভব হয়, তা নিরসনে র্যাব সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রয়েছে।
এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী কোনো ধরনের নাশকতার সম্ভাবনা নাই, অধিকন্তু বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠন/চরমপন্থী/স্বার্থান্বেষী মহল যেকোন অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি সৃষ্টি করে দেশের ভাবমূর্তি এবং ধর্মীয় স¤প্রীতি বিনষ্ট করার অপচেষ্টাসহ যেকোনো অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি প্রতিরোধে র্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রয়েছে। তারপরও যেকোনো সময় যেকোনো পরিস্থিতি এড়াতে র্যাব তৎপর।
এছাড়া র্যাব-৮ ব্যাটালিয়ন সদরে স্থাপিত কন্ট্রোল রুম থেকে সার্বক্ষণিকভাবে সার্বিক নজরদারি অব্যাহত থাকবে। আর কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতির আশঙ্কা থাকলে র্যাবকে তথ্য দিন, র্যাব তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছেন র্যাব-৮ এর উপ- অধিনায়ক মেজর মোহাম্মাদ জাহাঙ্গীর আলম।
এদিকে গোটা বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায় এবারে প্রায় ২ হাজার মন্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজোর আয়োজন করা হয়েছে। যারমধ্যে সবথেকে বেশি বরিশাল ও পিরোজপুর জেলায়। যারমধ্যে বরিশাল জেলা ও সিটি করপোরেশন মিলিয়ে স্থায়ী-অস্থায়ী ভাবে সর্বমোট ৬৪৭টি মন্ডপে অনুষ্ঠিত হবে দুর্গাপূজা। আর এরপরই পিরোজপুরে প্রায় সাড়ে ৫ শত টি মন্ডপে আয়োজন করা হয়েছে দুর্গাপূজার।
এরমধ্যে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার আশোকাঠী গ্রামে প্রয়াত জমিদার মোহন লাল সাহার বাড়িতে মহাধুমধামের মধ্যদিয়ে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও ভক্তদের পদচারনায় দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে। সিংহ মুর্তি খচিত জমিদার বাড়ির এ মন্দিরটি প্রায় ১৭২ বছরের পুরনো ও তৎকালীন ভারতীয় উপ-মহাদেশের সর্ববৃহৎ দুর্গা মন্দির। জমিদার বাড়ির উত্তরসূরীদের কাছ থেকে জানা গেছে, ১৮৫০ সালে খ্যাতিমান জমিদার মোহন লাল সাহার বাবা জমিদার প্রসন্ন কুমার সাহার উদ্যোগে মন্দিরটি নির্মাণ করা হয়েছিলো। কারুকার্জ খচিত ঐতিহাসিক এ মন্দিরের ছাঁদের ওপরের চারিপার্শ্বের সিংহ মূর্তিগুলো আজো যেন কালের স্বাক্ষী হয়ে রয়েছে। প্রায় ২০ ফুট উচ্চতার দুর্গা প্রতিমার এ মন্দিরটিতে এখনো পূর্বের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে। ৩০ গজ দৈর্ঘ্য, ২০ গজ প্রস্থ মন্দিরটিতে রয়েছে নকশা করা ৪৫টি স্তম্ভ। অপরদিকে বেদ, মহাভারত, শ্রীমদভগবদগীতা ও পৌরাণিক কাহিনী অবলম্বনে ৪০১ টি প্রতিমা নিয়ে বরিশাল বিভাগে সবচেয়ে বড় দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার কবুতরখালীর রাজমন্দিরে। প্রতিবার এখানে ব্যতিক্রমী
নানা আয়োজন করা হয়।