বরিশাল অফিস :: বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলার সাতলা বিল এলাকা এখন শাপলার অনাবিল সৌন্দর্য্যে ভরপুর। সূর্যের আভাকেও যেন হার মানিয়েছে বিলের পানিতে লতাপাতা গুল্মে ভরা শত শতাধিক লাল, নীল ও সাদা শাপলা।
এ যেন প্রকৃতির বুকে এক নকশি কাঁথা। বছরের ৭ মাস সময় ধরে শতশত একর জমির পানির মধ্যে কোটি কোটি জন্ম নেয়া নানা রংয়ের শাপলাগুলো এক নজর দেখার জন্য সকাল-দুপুর-সন্ধ্যায় হাজারো মানুষ ভিড় জমাচ্ছে শাপলা বিল গুলোতে।
পর্যটকদের আনাগোনায় দিনদিন মুখরিত হচ্ছে শাপলার রাজ্য সাতলা এলাকা । ওই এলাকার গ্রামাঞ্চলের সহজ সরল মানুষগুলো বিলের পানিতে জীবন সংগ্রামের আয়ের পথ হিসাবে বেছে নিয়েছে শাপলা তোলাকে। তারা সকালের সূর্যের আলো ফোটার আগেই ছোট ছোট নৌকা নিয়ে নেমে পড়েন শাপলা বিলে শাপলা তোলার জন্য। পানির মধ্য থেকে শাপলাগুলো তুলে এনে বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছে শতশত পরিবার। প্রায় ২শ বছর ধরে সাতলার বিলগুলোতে শাপলার জন্ম হচ্ছে। ওই এলাকার প্রায় ৫০ভাগ আদিবাসীরা শাপলার চাষ ও বিপণন কাজের সাথে জড়িত রয়েছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এক সময় শাপলার তেমন কোন চাহিদা না থাকায় পানিতে জন্মে পানিতেই মরে যেত। দিনে দিনে শাপলার চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় তা বাজারে বিক্রি করতে শুরু করে দিনমজুররা। এখন প্রায় সারা বছর ধরেই শাপলা পাওয়া যায়। বিশেষ করে এ অঞ্চলের মানুষ খাদ্যের তালিকায় শাপলাকে প্রাধান্য দিচ্ছে।
শাপলা তোলার কাজে জড়িত দিনমজুর দীপক (৩৮) বলেন, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শাপলা তুলে বাজারে বিক্রি করে চলছে তার সংসার। প্রতিদিন ৩থেকে ৪শ টাকা আয় হয় তাদের । এছাড়াও দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিনোদন ও প্রকৃতি প্রেমী মানুষের কাছে নানা সামগ্রী বিক্রী করে অর্থিক লাভবান হচ্ছেন।
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নানা শ্রেণি পেশার মানুষ সাতলার শাপলা বিলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করছেন। ঢাকার গাজীপুর থেকে আসা পর্যটক রুকসানা রুবাইদা বলেন, তিনি প্রকৃতির সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে এতদূর ছুটে আসছেন ।
বরগুনার আমতলী এলাকার মিজানুর রহমান বলেন, শাপলা বিলের অপরুপ সৌন্দর্য্য তিনি পুলকিত ও মুগ্ধ।
স্থানীয়রা দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা পর্যটকদের সুবিধার্থে সাতলা এলাকায় আবাসন ব্যবস্থার দাবী জানিয়েছেন। উজিরপুরের সাতলার শাপলা বিলের সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে আসা পর্যটকদের জন্য কালবিলা এলাকায় একটি ছোট পরিসরে আবাসন নির্মান করা হয়েছে।
বরিশাল উজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, উপজেলার সাতলা দিনে দিনে পর্যটন এলাকায় পরিনত হওয়ায় আমরা শাপলা বিলকে পরিপূর্ণ রুপ দিতে নানামুখী কাজ হাতে নিয়েছি।