শিরোনাম

বরিশালে সরকারি অফিসের অধিকাংশ অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র বিকল-অকেজো!

Views: 19

বরিশাল অফিস :: আগুন নেভাতে বরিশালের সরকারি দফতরগুলোতে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র থাকলেও বেশিরভাগেরই নেই মেয়াদ। কোনোটি অকেজো, আবার কোনো কোনো দফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ব্যবহার পদ্ধতি জানেন না। একেকটি অগ্নি দুর্ঘটনার পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নড়েচড়ে বসলেও নেন না কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস ফায়ার সার্ভিসের।

গত ১৩ অক্টোবর বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন ভবনের নিচতলার স্টোররুমে আগুন লাগে। হাসপাতালের কর্মচারীরা আগুন নেভানোর চেষ্টা চালালেও বেশিরভাগ অগ্নিনির্বাপন যন্ত্র বিকল। পরে ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিট দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

গত জুন মাসেও এই হাসপাতালেরই আরেকটি স্টোর রুমে আগুন লাগে। তখনও ক্ষয়ক্ষতি হয় সরকারি সম্পত্তির। এভাবে একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটে, কিন্তু টনক নড়ে না কর্তৃপক্ষের। হাসপাতালটির বিভিন্ন স্থানের বেশিরভাগ অগ্নিনির্বাপন যন্ত্রেরই মেয়াদ উত্তীর্ণ ও বিকল।

হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগীর স্বজন আসিফ জানান, বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একের পর এক আগুন লাগার ঘটনা ঘটলেও কোনো টনক নড়েনি প্রশাসনের। একই অভিযোগ হাসপাতালের কর্মচারীদেরও। তারা জানান জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন তারা। দ্রুত এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা যেন ব্যবস্থা নেয় সেই দাবিও করেন তারা।

তবে হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. এস এম মনিরুজ্জামান বলেন, দুই এক জায়গায় দুই একটি অগ্নিনির্বাপন যন্ত্র বিকল থাকতে পারে। এছাড়া সবই সচল আছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে। একই অবস্থা নগরীর বেশিরভাগ সরকারি অফিসের। খোদ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অগ্নি নির্বাপন যন্ত্রের বেশ কয়েকটিরই মেয়াদ নেই। জেলা ও দায়রা জজ আদালত ও আইনজীবী সমিতির ভবনগুলোরও একই দশা। এসব অফিস আদালতে প্রতিদিনই কয়েক হাজার মানুষ সেবা নিতে আসেন। তাই কোনো অগ্নি দুর্ঘটনা হলে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির শঙ্কা করছেন আইনজীবীরা।

বরিশাল জেলা ও দায়রা আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট সৈয়দ ওবায়েদ উল্লাহ সাজু বলেন, প্রতিদিন হাজার মানুষের আনাগোনা হয় সরকারি বিভিন্ন অফিস ও আদালতে। তবে এসব জায়গায় অগ্নি ঝুঁকি রয়েছে। সবার সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত ফায়ার সার্ভিসের মাধ্যমে অগ্নি নির্বাপন যন্ত্রের ব্যবস্থা করা হবে। শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে আমাদের শিক্ষা নেয়া উচিত। কোনোভাবেই মানুষকে আগুনের ঝুঁকিতে ফেলা যাবে না।

দুর্ঘটনার ঘটার পরে নয়, আগে থেকেই প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেয়ার তাগিদ সচেতন মহলের। আর জনবল সংকটের কথা জানিয়ে সবার সহযোগিতায়, দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস ফায়ার সার্ভিসের।

বিপ্লবী বাংলাদেশ পত্রিকার সম্পাদক নুরুল আলম ফরিদ বলেন, ‘বরিশাল নগরীতে এক সময় হাজার খানেক পুকুর থাকলেও দখলের কারণে এখন হাতেগোনা কিছু পুকুর রয়েছে। এমন অবস্থায় শহরে যানবাহন ও জনগণ বাড়লেও বাড়েনি রাস্তাঘাটের পরিধি। ফলে প্রায়ই পানি সংকট ও রাস্তা প্রসস্ত না হওয়ায় হিমশিম খেতে হয় ফায়ার সার্ভিসকে আগুন নিভাতে কাজ করতে গিয়ে। এছাড়া অধিকাংশ ভবন ও অফিসে নেই অগ্নিনির্বাপনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া জরুরি।

আর বরিশাল ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক মো. মোস্তফা মহসিন বলেন, ‘জনবল সংকট থাকলেও আমরা সব সময় কাজ করে যাচ্ছি। সামনে শীত আসলেই আগুন লাগার ঘটনা বেড়ে যায়। এমন অবস্থায় অনেকেই আগ্নি নির্বাপন যন্ত্রের বিষয়ে উদাসীন। তবে সবার সহযোগিতা পেলে বরিশালকে আরও নিরাপদ করে গড়ে তোলা যাবে। বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায় বর্তমানে ৪২টি ফায়ার স্টেশন চালু আছে।

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *