বরিশাল অফিস :: তিন মাসের একটি সেতু নির্মাণ প্রকল্পের কাজ দুই বছরেও শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সেতু আর সংযোগ সড়ক না করায় চরম দুর্ভোগে রয়েছেন তিন গ্রামের হাজারো মানুষ। প্রতিদিন সেতুটি পার হতে কাঠের সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করতে গিয়ে শিশু শিক্ষার্থী ও বয়স্করা কাঠের সিঁড়ি দিয়ে পরে আহত হচ্ছেন।
ঘটনাটি জেলার উজিরপুর উপজেলার বরাকোঠা ইউনিয়নের ধামুরা থেকে শের-ই বাংলা বাজার সংলগ্ন হাকিম ডাক্তারের বাড়ির সামনের। বাধ্য হয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি বাতিলের চিঠি দিয়েছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের উপজেলা কার্যালয়।
সূত্রমতে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০২১-২২ অর্থবছরে হাকিম ডাক্তারের বাড়ির সামনে একটি আরসিসি সেতু ও এর দুই পাশে ৫০০ মিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্য ৯০ লাখ ২৮ হাজার ৪৮৭ টাকা ব্যয়ে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ২০২১ সালের জুলাই মাসে দরপত্র আহবান করার পর কাজটি পায় মেসার্স মৌ এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ওই বছরের সেপ্টেম্বর মাসে কাজ শুরুর পর ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্প শেষ করার কথাছিলো। কিন্তু বিভিন্ন অজুহাতে কাজটি শেষ করতে পারেনি ঠিকাদার। দুই বছর
আগে সেতুর আংশিক নির্মাণ করলেও প্রকল্পে অধিকাংশ কাজ শেষ করেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ধামুরা, বরাকোঠা ও উত্তর বরাকোঠা গ্রামের বাসিন্দাদের চলাচলের প্রধানতম সড়ক হওয়ায় এলাকাবাসী বাধ্য হয়ে নির্মানাধীন সেতুরর আশিংক অংশে সুপারি গাছের সিঁড়ি দিয়ে চলাচল করছেন।
ধামুরা গ্রামের বাসিন্দা কবির হোসেন বলেন, সেতুটি নির্মাণের সময় বিকল্প কোন সড়ক করেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। উপজেলা প্রকৌশলীও তা নজরদারি করেনি। যেকারণে সড়কের বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় গ্রামবাসীদের চলাচল করতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, সেতুটি নির্মাণ হলেও সংযোগ সড়ক না করায় দুর্ভোগ আর শেষ হয়নি।
বরাকোঠা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সহিদুল ইসলাম মৃধা বলেন, প্রায় দুই বছর ধরে নির্মানাধীন সেতুটি সংযোগ সড়ক ছাড়া পরে রয়েছে। এতে করে ওইসব
এলাকার বাসিন্দাদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ভোগান্তি লাঘবে ঠিকাদারকে একাধিকার তাগিদ দেওয়া সত্বেও ঠিকাদার তাতে কোন কর্নপাত করেননি। শেষে উপায়অন্তুর না পেয়ে উপজেলা প্রকৌশলীকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের উজিরপুর উপজেলার প্রকৌশলী সুব্রত রায় বলেন, কাজটি তিন মাসের মধ্যে শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু ঠিকাদার দুই বছরেও কাজটি শেষ করেনি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সঠিকভাবে সেতুর কাজ কিংবা সংযোগ সড়ক করেনি। তাই ঠিকাদারের সাথে চুক্তি বাতিল করার জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি প্রেরণ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, চুক্তি বাতিল হলেই নতুন করে নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে।