বরিশাল অফিস :: সারাদেশের ন্যায় বরিশালেও চলছে বৈশাখের প্রচন্ড দাপদাহ। ফলে তৃতীয়বারের মতো চলছে হিট অ্যালার্ট। এরইমধ্যেই জেলার সর্বত্র উত্তাপ ছড়িয়ে পরেছে উপজেলা নির্বাচনকে ঘিরে। এবারের নির্বাচন শতভাগ গ্রহণযোগ্য করার জন্য নির্বাচন কমিশন ও সরকারের কঠোর অবস্থানের কারণে অনেকটা বেকায়দায় পরেছেন সরকার দলীয় কতিপয়
বির্তকিত প্রার্থীরা।
জনপ্রিয়তা যাচাই করতে প্রার্থীদের এবার ভোটারদের ভোটের মাধ্যমেই নির্বাচিতছাড়া অন্যকোন বিকল্প পথ নেই। নির্বাচন সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের এমনই কঠোর অবস্থানের কারণে জেলার নয়টি উপজেলার চেয়ারম্যান, পুরুষ ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী এবং তাদের সমর্থকরা অসহনীয় গরমকে উপক্ষো করেই ভোট প্রার্থনায় ভোটারদের দ্বারে দ্বারে
ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নির্বাচনে বিএনপি ও অন্যান্য দলের প্রার্থীরা অংশগ্রহণ না করলেও প্রতিটি উপজেলায় ক্ষমতাসীন দলের মধ্যথেকে একাধিক প্রার্থী হয়েছেন। সাথে এবারও প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান পরিষদের জনপ্রতিনিধিরা। নির্বাচনকে সামনে রেখে অদ্যবর্ধি কোন সংঘাতের খবর পাওয়া না গেলেও প্রায় প্রতিটি উপজেলায় নিজ দলের বিভিন্ন প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে প্রকাশ্যে কর্মীসভার মাধ্যমে হুমকি- ধামকির বিস্তার অভিযোগ উঠেছে।
প্রতিদ্বন্ধিতা করা অসংখ্য প্রার্থীরা অভিযোগ করেন, জেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন প্রভাবশালী নেতৃবৃন্দ ও সংসদ সদস্যদের নাম ব্যবহার করে দলীয় প্রার্থী দাবি করে কয়েকজন প্রার্থী নির্বাচনী মাঠে প্রভাব বিস্তার করে চলেছেন। তারা ইতোমধ্যে কর্মীসভার মাধ্যমে প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থীদের বিভিন্নধরনের হুমকি-ধামকি অব্যাহত রেখেছেন। এ ব্যাপারে এখনই কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে ওই প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের জন্য পুরো নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে দাঁড়াবে।
তবে সচেতন ভোটাররা নির্বাচন কমিশন ও সরকারের কাছে দাবি রেখে বলেন, বিএনপি অতীতের নির্বাচনকে রাতে ভোট হয়েছে দাবি করে আসছে। এবার যেন সেইধরনের কোন অভিযোগ না ওঠে। ভোটাররা যেন নিবিঘেœ ভোট কেন্দ্রে গিয়ে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন। তারা আরও বলেন, কয়েকটি ধাপে উপজেলা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ করা হবে। এরমধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় নির্বাচনকে পর্যালোচনা করেই অন্যান্য ধাপের নির্বাচন মূল্যায়িত হবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, যেসব প্রার্থীর নির্বাচনী মাঠে গ্রহণযোগ্যতা নেই। সেইসব প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরাই বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধামকি দিয়ে সাধারণ ভোটারদের মাঝে প্রভাব বিস্তার করতে চাচ্ছেন। এতে নির্বাচনী মাঠে যেমন বিশৃঙ্খল
পরিবেশ তৈরি হচ্ছে, তেমনি ওইসব প্রার্থীরা নির্বাচনকেও প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্ঠা করছে। তাই ওইসব বির্তকিত প্রার্থীদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের এখনই কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
রিটার্নিং অফিসার ও জেলার সিনিয়র নির্বাচন অফিসার ওয়াহিদুল ইসলাম মুন্সি জানান, ষষ্ট উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের সার্বিক বিষয়ে পর্যালোচনা করতে নির্বাচন কমিশনার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) মোঃ আহসান হাবিব খান তিনদিনের সফরে শুক্রবার বরিশালে এসেছেন। ওইদিন বিকেলে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে প্রথমধাপের বরিশাল সদর ও বাকেরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থীদের সাথে আচারণ বিধি ও অন্যান্য বিষয়ে মতবিনিময় করেছেন।
পরে নির্বাচন কমিশনার একইদিন জেলার কয়েকটি নির্বাচন এলাকা পরিদর্শন করেন। নির্বাচন কমিশনার এবারের উপজেলা নির্বাচনকে শতভাগ অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে সংশ্লিষ্ট সকলকে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন। ফলে নির্বাচনকে বির্তকিত করতে যারা ষড়যন্ত্র কিংবা ভোটের মাঠে প্রভাব বিস্তারের চেষ্ঠা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর থেকে কঠোরতম পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। যা বাংলাদেশে ইতিহাস হয়ে থাকবে বলেও তিনি (রিটার্নিং অফিসার) উল্লেখ করেন।
রিটার্নিং অফিসার ওয়াহিদুল ইসলাম মুন্সি আরও বলেন, নির্বাচন কমিশনার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) মোঃ আহসান হাবিব খান প্রধান অতিথি হিসেবে শনিবার সকাল দশটায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনের আরেকটি সভায় অংশগ্রহণ করবেন। ওই সভায় বরিশাল সদর ও বাকেরগঞ্জ উপজেলার ভোটগ্রহণের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে নির্বাচন কমিশনার ব্রিফিং করবেন। এরপর তিনি (নির্বাচন কমিশনার) পিরোজপুরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন।