শিরোনাম

বরিশালে শতবর্ষী ‘করিম উদ্দিনের মেলা’

Views: 45

বরিশাল অফিস : বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলার ধামসর গ্রামে জমে উঠেছে ১৫০ বছর আগের পুরোনো ঐতিবাহী ‘করিম উদ্দিনের মেলা’ এ মেলার নেই আগাম প্রচার প্রচারনা। এরপরও বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিভিন্ন পণ্য নিয়ে ব্যবসায়ীরা সমবেত হোন উপজেলার করিম উদ্দিনের মেলায়। দেড়শ বছর আগ থেকে চলে আসা এই মেলা যেন এ অঞ্চলের মানুষের প্রানের স্পন্দন। এ মেলাটি একটি গ্রামে বসলেও এর উৎসবের আমেজ থাকে আশেপাশের কয়েকটি উপজেলাজুড়ে।

উজিরপুর উপজেলার উত্তর-পূর্বে বামরাইল ইউনিয়নের পূর্ব ধামসর গ্রামে বসে করিম উদ্দিনের মেলা।স্থানীয় লোকজন জানান, ‘করিম উদ্দিনের মেলা শত বছর ধরে বসে আসছে। অনেকের বাপ-দাদারাও ছোটবেলা থেকে এই মেলা দেখে বড় হয়েছেন। তাদের বাপ-দাদারাও পূর্বপুরুষের কাছ থেকে একই কথা শুনেছেন। মাঘ মাসের শেষ দিকে বসে মেলাটি, চলে ফাল্গুন মাসের ১৭ থেকে ১৮ তারিখ পর্যন্ত।’

মেলায় ঘুরতে আসা কয়েকজন বয়োজ্যেষ্ঠ বলেন, ‘বাপ-দাদার মুখ থেকে শুনে ধারণা করা হয়, করিম উদ্দিনের মেলাটি প্রায় ১৫০ বছর আগের পুরোনো। আগে এই মেলায় ঘোড়দৌড় অনুষ্ঠিত হত। এই মেলার আগাম কোনো প্রচারণা থাকে না। শত বছর ধরে মাঘ মাসের শেষ দিনে পূর্ব ধামসর গ্রামের ব্যবসায়ীরা পণ্য নিয়ে এখানে পসরা সাজান।’

আর মেলাটি শুধু মেলা প্রাঙ্গণেই সীমিত নয়, বছরের পর বছর ধরে এ উপলক্ষে জামাতা ও আত্মীয়স্বজনকে আমন্ত্রণ করে আপ্যায়ন করার প্রথাও চালু আছে। গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে বানানো হয়েছে খই, মুড়কি, নারকেলের ও চালের নাড়ু। মেলা থেকে দই-মিষ্টি কিনে নিয়ে মুড়কি দিয়ে খাওয়ার প্রথাটিও আছে এখনও।

সরেজমিনে করিম উদ্দিনের মেলায় দেখা গেছে, হরেক পণ্য নিয়ে পসরা সাজিয়ে বসেছেন দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা ব্যবসায়ীরা। মিষ্টান্ন, খেলনা, চুড়ি, ফিতা, আলতা থেকে গৃহস্থালির জিনিসপত্র। জিলাপি ভাজা হচ্ছে বিক্রি হচ্ছে। মেলায় ঘোরা শেষে জিলাপি কিনে বাড়ি ফেরেন না এমন মানুষ নেই। আরো আছে ‘ঝুড়ি মেলার’ ঐতিহ্য।

মেলায় আগত অনেকেই জানালেন গ্রাম বাংলার প্রানের ঐতিহ্য ধরে রেখেছে এই করিম উদ্দিনের মেলা। এখানে এলে সব ধরনের জিনিস পাওয়া যায়। প্রতি বছরই আসা হয়। মেলার ঐতিহ্যবাহী গুড়ের জিলাপি তাদের খুব পছন্দের।’

করিম উদ্দিনের মেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো: এনায়েত হোসেন বলেন, ‘১৫ দিনব্যাপীর এই মেলা গত বুধবার শুরু হয়েছে। তবে লেপ-তোষক ফার্নিচারের দোকানপাট মাসব্যাপী থাকবে। মেলা থেকে উপার্জিত আয় গ্রামের শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের কল্যাণে, গ্রামের মানুষের কর পরিশোধে ও সেবামূলক কাজে ব্যয় করা হয়।’

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *