শিরোনাম

বরিশালে ৪ শিল্পীর কণ্ঠে আসছে জীবনানন্দ দাশের ৫ গান

Views: 108

বরিশাল অফিস :: কবি জীবনানন্দ দাশের লেখা ১৫টি গানের মধ্যে প্রথমবারের মতো পাঁচটি গানের সুরারোপ করা হয়েছে। কবির ১‌২৫তম জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে গানগুলো পরিবেশন করবেন বরিশালের চার গুণী সুরকার ও শিল্পী।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জীবনানন্দ জন্মজয়ন্তী উদযাপন পর্ষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক দীপঙ্কর চক্রবর্তী।

তিনি বলেন, জীবনানন্দকে ভালোবাসেন এমন মানুষদের জন্য এবারের আয়োজন একটি মাইলফলক। আমরা সাধারণত জেনে এসেছি জীবনানন্দ অসংখ্য কবিতা লিখেছেন। বেশ কয়েকটি উপন্যাস, ছোটগল্প ও প্রবন্ধ লিখেছিলেন। কিন্তু তিনি যে গানও লিখেছিলেন তা আসলে এতদিন আলোয় আসেনি। তার লেখা ১৫টি গান প্রথমবারের মত সুরা করা হচ্ছে। এটি সবার জন্যই আনন্দের সংবাদ। এছাড়াও জীবনানন্দ দাশের কবিতার মঞ্চায়ন হবে।

আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি ব্রজমোহন বিদ্যালয়ের মূল ফটকে অস্থায়ী মঞ্চ করে দুই ঘণ্টাব্যাপী অনুষ্ঠান হবে। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় অনুষ্ঠান শুরু হবে বলে জানিয়েছেন জন্মজয়ন্তী উদযাপন পর্ষদের সদস্য জাহিদ আব্দুল্লাহ রাহাত।

তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করছি মানুষকে পরিবেশবান্ধব আচরণে উদ্বুদ্ধ করতে। পুরো অনুষ্ঠানে কোনো প্লাস্টিক সামগ্রী ব্যবহৃত হবে না। জীবনানন্দের কবিতায় সুর হয়েছে এবং ক্যামেরায় দৃশ্যায়ন হয়েছে। তার জীবনীভিত্তিক উপন্যাস ‘একজন কমলালেবু’ এর নাট্যরূপ হয়েছে কিন্তু মঞ্চে পারফর্মিং আর্টের মাধ্যমে কবিতার দৃশ্যায়ন সম্ভবত এই প্রথম। জীবনানন্দের কবিতার এত লেয়ার যে এক মঞ্চে উপস্থাপন করা সত্যিই দুরূহ। এই চ্যালেঞ্জিং কাজটিই আমরা এবার আয়োজনে করতে যাচ্ছি।

অনুষ্ঠানে কোনো প্রধান অতিথি না থাকলেও তিনজন তরুণ যারা জীবনানন্দকে নিয়ে কাজ করেন তারা কথা বলবেন। এরা হচ্ছেন জীবনানন্দ গবেষক আমীন আল রশীদ, পাখি বিশেষজ্ঞ সৌরভ মাহমুদ ও জীবনানন্দকর্মী আব্দুল্লাহ মাহফুজ অভাব আরেক সদস্য সৈয়দ মেহেদী হাসান জানান, নজরুল সঙ্গীত শিল্পী মৈত্রী ঘরাইয়ের সুর ও কণ্ঠে ‘আজ বিকেলের ধূসর আলোয়’ গানটি, আধুনিক গানের শিল্পী সোহেল রানার সুর ও কণ্ঠে ‘সারাদিন আমি কোথায় ছিলাম’, নজরুল সংগীত শিল্পী সঞ্জয় হালদারের সুর ও কণ্ঠে ‘তুমি আমার মনে এলে, উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত শিল্পী রিপন কুমার গুহর সুর ও কণ্ঠে ‘মনে পড়ে আমি ছিলাম বেবিলনের রাজা’ এবং মৈত্রী ঘরাই ও সঞ্জয় হালদারের দ্বৈত সুর ও কণ্ঠে ‘কাউকে ভালোবেসেছিলাম জানি’ শিরোনামের গানটি পরিবেশিত হবে।

সুরকার সোহেল রানা বলেন, জীবনানন্দ দাশের লেখা কোনো গানের সুর করতে পারাটা আমার ভাগ্য হিসেবে মনে করি। আমার সঙ্গীত জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ বলে আমি বিবেচনা করি। আমি আমার জায়গা থেকে জীবনানন্দ দাশের লেখার যে ধরন সে অনুসারে সুর করার চেষ্টামাত্র করেছি। আশা করি গানটি শুনে ভালো লাগবে।

কবিতা মঞ্চায়নের নির্দেশক শহিদুল ইসলাম শিশির বলেন, জীবনানন্দ দাশের ১২৫তম জন্মজয়ন্তীতে আমরা যে আয়োজনটি করেছি সেটি দেশ ও সারা বিশ্বের জীবনানন্দ প্রেমীদের মাঝে ছড়িয়ে পড়বে। আমরা ব্রজমোহন বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আয়োজন করছি। এই বিদ্যাপিঠেই জীবনানন্দ দাশ লেখাপড়া করেছেন। আমাদের আয়োজনে জীবনানন্দ দাশের কবিতায় দৃশ্যায়ন করছে ব্রজমোহন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ফলে সবদিক থেকেই অনুষ্ঠানটি গুরুত্ব বহন করে। আশা করি অনুষ্ঠানটি সকলের ভালো লাগবে।

উল্লেখ্য, কবি জীবনানন্দ দাশ ১৮৯৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন। তাকে স্মরণ করে একই দিন সরকারি ব্রজমোহন কলেজে তিন দিনের মেলা, জাতীয় কবিতা পরিষদ একদিনের এবং বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। কবি কলকাতায় ট্রাম দুর্ঘটনায় ১৯৫৪ সালে ২২ অক্টোবর মৃত্যুবরণ করেন।

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *