বরিশাল অফিস:: বরিশাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির (আইএইচটি) শিক্ষার্থীরা গত বছরের ডিসেম্বরে হোস্টেল সুপার ডা. সানজিদা শহীদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিলেন। আন্দোলনে অংশ নেওয়া ১৩ শিক্ষার্থীকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। ওই শিক্ষার্থীদের হোস্টেল থেকে কেন বহিষ্কার করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে নোটিশে। গত ২০ মার্চ নোটিশ প্রদানের পর থেকে শিক্ষাজীবন নিয়ে শঙ্কিত শিক্ষার্থীরা।
জানা গেছে, ছাত্রাবাসের ১০টি কক্ষের ১০ ছাত্রকে এ নোটিশ দেওয়া হয়। তারা হচ্ছেন ৩১৮ নম্বর কক্ষের রেডিওলজি বিভাগের মো. সোহেল, ৩০৬ নম্বর কক্ষের একই বিভাগের মো. ঈসা, ৫০১ নম্বর কক্ষের ল্যাবরেটরি বিভাগের সাবিত হাসান, ৩০৭ নম্বর কক্ষের ফিজিওথেরাপি বিভাগের জহিরুল ইসলাম, ৩০১ নম্বর কক্ষের ডেন্টালের ফারদিন ইসলাম, ৫০৩ নম্বর কক্ষের রেডিওলজি বিভাগের তাহমিদুল হক, ২১৫ নম্বর কক্ষের ল্যাবরেটরি বিভাগের আল শাহরিয়ার, ২১২ নম্বর কক্ষের ফার্মেসী বিভাগের হাসানুর রহমান, ২০৩ নম্বর কক্ষের ফিজিওথেরাপির সজীব ঘরামী ও একই কক্ষের ডেন্টালের সৈকত পাল।
এ ছাড়া ছাত্রীনিবাসের ৩ শিক্ষার্থী হচ্ছে ৪১৬ নম্বর কক্ষের রেডিওলজি বিভাগের সানমুন জাহান বুশরা, একই বিভাগের ৪০৯ নম্বর কক্ষের আছমিতা আহম্মেদ মিম ও ৩১৮ নম্বর কক্ষের রেডিওথেরাপি বিভাগের শারমিন জাহান মুক্তা।
গত বছর ডিসেম্বর মাসে ছাত্রীদের হিজাব নিয়ে কটাক্ষ করায় শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করে। সেই আন্দোলনে যারা সামনের সারিতে ছিলেন তাদেরকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করছেন সুপার সানজিদা শহীদ। আইএইচটি এর একাধিক সূত্রে অভিযোগ রয়েছে ছাত্রাবাসের সুপার হবেন পুরুষ শিক্ষক। কিন্তু সানজিদা মহাপরিচালকের লোক হওয়ায় অধ্যক্ষ আইনবহির্ভূতভাবে একজন নারীকে হল সুপার করেন।
আইএইচটি এর ল্যাবরেটরি বিভাগের আল শাহরিয়ার বলেন, ‘হল সুপার সানজিদা ম্যাডাম ১০ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের তালিকা করে একাডেমিক ভবনের নোটিশ বোর্ডে টানিয়ে দেয়। সেখানে তাদের বিরুদ্ধে হোস্টেলের অভ্যন্তরে আইনশৃংখলা অমান্য করার অভিযোগ আনা হয়।
একই বিভাগের অপর ছাত্র সাবিত হাসান বলেন, একই কারণে এ বছর জানুয়ারি মাসে ইয়ার ফাইনাল পরীক্ষায় ফিজিওথেরাপি বিভাগের জহিরুল ইসলাম ও রেডিওলজি বিভাগের আছমিতা আহম্মেদ মিমকে বহিষ্কার করা হয়। কিন্তু তাদের কোনো দোষ ছিল না। শিক্ষিকা সানজিদা নকলের অভিযোগ তুলে তাদের বহিষ্কার করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওই দুই শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করতে গেলে সহপাঠীরা তাদের রক্ষা করেন। তাদের দোষ ছিল তারা সানজিদা শহীদের বিরুদ্ধে আন্দোলনে ছিলেন।
আইএইচটি এর একাধিক সাধারণ শিক্ষার্থী বলেন, কোনোভাবে হোস্টেল সুপার সানজিদার বিরুদ্ধাচরণ করা যাবে না। তার বিরুদ্ধে গেলে শিক্ষকদের হাতে যে নম্বর থাকে তা কেটে দেয়াসহ সেমিস্টারে অকৃতকার্য করে রাখা হবে বলে হুমকি দেন।
এ প্রসঙ্গে আইএইচটির সহকারী অধ্যাপক ও হল সুপার (ছাত্র) ডা. সানজিদা শহীদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘যারা আইএইচটিতে কর্মরত রয়েছে সকলেই মহাপরিচালকের লোক। তার বিরুদ্ধে আন্দোলন করায় তিনি এ নোটিশ দেননি। হোস্টেলে তাদের কর্মকাণ্ড ভালো না থাকায় নোটিশ করা হয়েছে।’
বরিশালে আইএইচটির হোস্টেলে ছাত্রীদের মারধরের অভিযোগ ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে বরিশালে আইএইচটির হোস্টেলে ছাত্রীদের মারধরের অভিযোগ ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে
নিয়মানুযায়ী ছাত্র হোস্টেলে কোনোভাবেই একজন নারী দায়িত্ব পালন করতে পারেন না, তিনি এ বিষয়ে বলেন, ‘যে সময় তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ওই সময় কোনো পুরুষ শিক্ষক না থাকায় বাধ্য হয়ে অধ্যক্ষ তাকে হল সুপারের দায়িত্ব দেন।’
এ ব্যপারে আইচএইচটি অধ্যক্ষ ডা. মানুষ কুন্ডু সাংবাদিকদের বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের চাপে রাখার জন্য নোটিশ দেওয়া হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এর সমাধান করা হবে।’ ছাত্র হোস্টেলে কীভাবে একজন নারীকে হলসুপার করা হলো। এ প্রশ্নের জবাবে অধ্যক্ষ বলেন, ‘পুরুষ শিক্ষক না থাকায় তাকে হলসুপার করা হয়।’