শিরোনাম

বরিশাল সিটি করপোরেশন ঘুরে ফিরে একই প্রতিষ্ঠানে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা

Views: 41

বরিশাল অফিস :: ম্যাজিষ্ট্রেট থেকে সচিব, সচিব থেকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, পরবর্তীতে নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে মোঃ ইসরাইল হোসেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের দায়িত্ব পালন করছেন। দীর্ঘবছর ঘুরে ফিরে তার একই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকার বিষয়টি রহস্যজনক বলে মনে করছেন বিসিসি’র কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

সিটি করপোরেশনের কৌতুহলি অসংখ্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা প্রশ্ন তুলে বলছেন, অনেক মধু রয়েছে বরিশাল সিটি করপোরেশনে। যেকারণে দীর্ঘবছর পর্যন্ত ঘুরে ফিরে একই সিটি করপোরেশনে থাকছেন বর্তমানে নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা ইসরাইল
হোসেন।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, সম্পূর্ণ অবৈধপন্থায় চুক্তিভিত্তিক কর্মকর্তা নিয়োগ, সাবেক মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহর কাছ থেকে গাড়ি ক্রয়ের জন্য ১০ লাখ টাকা পুরস্কার হিসেবে গ্রহণ এবং সদ্য সাবেক মেয়র খোকন সেরনিয়াবাতের কাছ থেকে পুরস্কার স্বরূপ টাকা নিয়ে ফ্লাট ক্রয়ের অভিযোগ রয়েছে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০০৮ সালে শওকত হোসেন হিরন মেয়র থাকাকালীন সময় সিটি করপোরেশনের ম্যাজিষ্ট্রেট হিসেবে ইসরাইল হোসেন যোগদান করেন। এরপর থেকেই নানা কৌশল অবলম্বন করতে থাকেন। মাঝখানে কয়েক বছর অন্য প্রতিষ্ঠানে চাকরি করলেও আবার ঘুরে ফিরে চলে আসেন বরিশাল সিটি করপোরেশনে। ২০১৮ সালে তিনি (ইসরাইল) বরিশাল সিটি করপোরেশনের সচিব হিসেবে যোগদান করেন। একই বছরের ৯ আগস্ট থেকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত তিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

এরপর ২০১৯ সালের ৫ আগস্ট তিনি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহন করে ২০২০ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি থেকে অদ্যবর্ধি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে ইসরাইল হোসেন দায়িত্ব পালন করছেন।

সূত্রমতে, আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক মেয়রদের মনজয় করে দীর্ঘবছর বহাল তবিয়তে বরিশাল সিটি করপোরেশনে দায়িত্ব পালন করা ইসরাইল হোসেনকে নিয়ে জনমনে নানা কৌতুহলের সৃষ্টি হয়েছে। বিসিসি’র নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্রে জানা গেছে, করপোরেশন টাউন প্লানার এবং আর্কিটেক্টস পদে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে চুক্তিভিত্তিক দুইজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে টাউন প্লানার পদে বেতন নির্ধারন করা হয় ৪০ হাজার টাকা। সেই পদের বিপরতীতে কোন রকম নিয়োগ প্রক্রিয়া ছাড়াই রহস্যজনকভাবে তিনমাসের মেয়াদে সৈয়দা তাবাচ্ছুম ইসলাম নামের এক নারী কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়। একইভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া ছাড়াই তদ্বিরের কারণে আর্কিটেক্ট পদে ৫০ হাজার টাকা বেতনে একবছর মেয়াদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে গোপালগঞ্জের বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম নুশানকে।

সূত্রে আরও জানা গেছে, চুক্তির মেয়াদ শেষ হবার পরেও সম্পূর্ণ রহস্যজনকভাবে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অবৈধভাবে নিয়োগ করা চুক্তিভিত্তিক ওই দুই কর্মকর্তার চুক্তির মেয়ায় পূর্ণরায় বৃদ্ধি করেছেন। এ ব্যাপারে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া টাউন প্লানার সৈয়দা তাবাচ্ছুম ইসলাম ও আর্কিটেক্ট সাইফুল ইসলাম লুশানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা কোন কথা বলতে রাজি হননি। তবে উভয়েই সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তার সাথে কথা বলার অনুরোধ করেন।

বিসিসি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাইল হোসেন বলেন, সিটি করপোরেশনের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়ার ক্ষমতা নেই। এটা নিয়োগ দিয়ে থাকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। তবে জনপ্রশাসন থেকে ওই দুই কর্মকর্তার নিয়োগ দেওয়া হয়নি শিকার করে তিনি বলেছেন, লোকবল সংকটের কারনে সিটি করপোরেশন থেকে তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

উভয় কর্মকর্তার চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে তাদের নিয়োগের মেয়াদ আবার বাড়ানো
হয়েছে।

চুক্তিভিত্তিক অবৈধ নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের মেয়াদ বৃদ্ধির কাগজপত্র দেখতে চাইলে তিনি (প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা) তথ্য অধিকার আইনে ফরমপূরন করে আবেদন করার পরামর্শ দিয়েছেন। সাবেক মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহর কাছ থেকে উপহার হিসেবে গাড়িক্রয়ের জন্য টাকা এবং খোকন সেরনিয়াবাতের কাছ থেকে পুরস্কার হিসেবে ফ্লাট ক্রয়ের জন্য টাকা নেওয়ার অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করে ইসরাইল হোসেন বলেন, ২০১৮ সালে ১৯ জন শেয়ার মিলে নগরীর ব্যাপ্টিস মিশন রোডে জমি ক্রয় করেছি। সেখানে ফ্লাট নির্মানের কাজ
চলমান রয়েছে।

ঘুরে ফিরে একই সিটি করপোরেশনে থাকা প্রসঙ্গে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন,আমার স্ত্রী বরিশালে চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত থাকায় আমিও বরিশালে কর্মরত রয়েছি।
তবে বরিশাল সিটি করপোরেশন থেকে অন্যত্র বদলী হওয়ার জন্য তদ্বির করছেন বলেও তিনি জানান।

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *