পটুয়াখালী প্রতিনিধি :: ঈদুল ফিতর ও পহেলা বৈশাখের ছুটিকে কেন্দ্র করে পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত হবে সূর্যোদয় সূর্যাস্তের বেলাভূমি ‘সাগরকন্যা’ কুয়াকাটায়। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর ব্যাপকভাবে পর্যটন দেখা গেছে কুয়াকাটায়। তাই এবারের ঈদে ব্যবসা-বাণিজ্য গতি পাবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। এরই মধ্যে ৬০ শতাংশ হোটেল মোটেল কক্ষ বুকিং হয়েছে বলে হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। পর্যটকদের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা ও সেবা দিতে প্রস্তুতি নিয়েছে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও পৌর কর্তৃপক্ষ।
খুশির ছোঁয়া লেগেছে স্থানীয় পর্যটন ব্যবসায়ীদের, ইতিমধ্যেই পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সাজিয়ে নিচ্ছে আবাসিক হোটেল, রেস্তোরাঁ , বেচাকেনার জন্য তৈরি রয়েছে রাখাইন মহিলা মার্কেট, ঝিনুক মার্কেট, বার্মিজ আচার, কাঁকড়া ফ্রাই, পর্যটকদের ছবি তোলার জন্য প্রস্তুত ক্যামেরাম্যান সহ, চটপটি ফুচকার দোকানে দেখা গেছে মানুষের আনাগোনা, কুয়াকাটা দর্শনীয় স্থানগুলো ভ্রমণ করাতে প্রস্তুত , মোটরসাইকেল ড্রাইভার, অটোরিকশা চালক,কুয়াকাটা থেকে সমুদ্রপথে বিভিন্ন দ্বীপ ও বনাঞ্চল ভ্রমণ করানোর জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে ট্যুরিস্ট বোট,স্পিড বোট এবং ওয়াটার বাইক ।
আরো পড়ুন : দুমকিতে রাস্তা সংস্কার বন্ধ দুবছর
কুয়াকাটা সৈকতের জিরো পয়েন্ট থেকে পূর্ব ও পশ্চিমে মনোমুগ্ধকর ১৮ কিলোমিটার বেলাভূমি রয়েছে। পর্যটকরা এখানকার ট্যুরিজম পার্ক , জাতীয় উদ্যান (ইকোপার্ক), শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধ বিহার, সীমা বৌদ্ধ বিহার ঘুরে দেখেন। এ ছাড়া কুয়াকাটার পশ্চিমে সমুদ্র পথে ফাতরার বন, সোনাকাটা ফকিরহাট ( ইকোপার্ক),লাল কাঁকড়ার চর, লেম্বুর বন, শুটকি পল্লী ও ভ্রমণপিপাসুদের আগ্রহের কেন্দ্রে থাকে।
আচার বিক্রেতা মো. জহির রায়হান বলেন, নানা ধরনের দেশি বিদেশি আচার ও চকলেট উঠেয়েছি দোকানে। টানা ছুটিতে কুয়াকাটায় হাজারো পর্যটকদের আনাগোনা থাকবে। তাদের হাতে আমরা বাহারী স্বাদের আচার ও চকলেট বিক্রি করব। দামে মানে ও গুনে আমরা পর্যটকদের কথা মাথায় রাখি বরাবরই।
অভিজাত আবাসিক সিকদার রিসোর্ট এন্ড ভিলার্স এবং ওসান ভিউ হোটেল এন্ড কনভেনশন এসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার মো. আল-আমীন খান বলেন, আমাদের এখন পর্যন্ত ৫০ শতাংশ অগ্রীম বুকিং সম্পন্ন হয়েছে। প্রতিক্ষণই পর্যটকরা ফোনে খোঁজ খবর নিচ্ছে। আশাবাদী শতভাগ রুম বুক হয়ে যাবে। আমরা পর্যটকদের জন্য স্পেশাল ডিসকাউন্ট রেখেছি।
হোটেল মোটেল ওনার্স অসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরিফ বলেন, আমরা আশাবাদী পবিত্র ঈদুল ফিতর ও পহেলা বৈশাখের ছুটিকে কেন্দ্র করে কুয়াকাটায় অনেক ট্যুরিস্টের আগমন হবে।আবার আগের মত প্রাণ খুঁজে পাবে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত, হাসি ফুটবে সকল ব্যবসায়ীদের মনে। হোটেল মোটেল গুলোতে ৬০% এর মত আগাম বুকিং হয়েছে।
কুয়াকাটা বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য সচিব ও কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব মো. রবিউল ইসলাম বলেন, “ঈদ পরবর্তী সময়ে কুয়াকাটায় পর্যটকদের ভিড় বাড়বে এমন ধারণা মাথায় রেখেই আমরা প্রস্তুতি সভা করেছি। ভ্রাম্যমাণ আদালতের একটি দল সার্বক্ষণিক মাঠে থাকবে। চিকিৎসক দল, ফায়ার সাভির্স অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সদসরাও তৈরি রয়েছে।
টুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা রিজিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ বলেন, কুয়াকাটায় ঘুরতে আসা সকল পর্যটকদের সেবা দেওয়া ও আইনি সহায়তা দেওয়া আমাদের কর্তব্য। পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে কুয়াকাটায় অনেক পর্যটক আসবে তাই আমরা অনেক নিরাপত্তাব্যবস্থা করেছি। সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। সাদা পোশাকে আমাদের সদস্যরা টহলে থাকবেন। আশা করছি আমরা পর্যটকদের শতভাগ নিরাপত্তা দিতে পারব।