চলতি বছরের জুন পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে সরকারের পুঞ্জীভূত ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ৫৬ হাজার ৪৮ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। শেখ হাসিনা সরকারের বিগত সময়ে অতিরিক্ত টাকা ছাপানোর ফলে এই ঋণ দেশের অর্থনীতির জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে। এর প্রভাব ইতোমধ্যেই মূল্যস্ফীতির হার বাড়িয়ে তুলেছে। ফলে বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন করে টাকা ছাপিয়ে সরকারকে ঋণ না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের বাজেটে ব্যাংক খাত থেকে ১ লাখ ৩৭ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত প্রথম চার মাসে সরকার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নতুন করে কোনো ঋণ গ্রহণ করেনি। বরং চাহিদা পূরণের জন্য বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
সরকারের রাজস্ব আয়ের ঘাটতি মোকাবিলায়, গত চার মাসে বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ৫৬ হাজার ২২৯ কোটি টাকা ঋণ গ্রহণ করা হয়েছে। সেই ঋণের একটি বড় অংশ, প্রায় ৩৯ হাজার ৫৩৩ কোটি টাকা, বাংলাদেশ ব্যাংকের পুরনো ঋণ শোধ করতে ব্যবহার করা হয়েছে। এতে বোঝা যায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণ পরিশোধে সরকার বাণিজ্যিক ব্যাংকের উপর আরও নির্ভরশীল হয়ে উঠেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, সরকারি ব্যয়ের চাহিদা পূরণে বাণিজ্যিক ব্যাংকের উপর অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতায় প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে, বাণিজ্যিক ব্যাংকের ঋণগ্রহণের এই প্রবণতা ক্রমবর্ধমানভাবে সুদের হার বাড়িয়ে তুলতে পারে, যা ব্যবসায়ী এবং সাধারণ মানুষের জন্য আরও চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে। এ কারণে রাজস্ব আয় বৃদ্ধির কৌশল নিয়ে সরকারকে পুনর্বিবেচনা করার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছেন অর্থনীতি বিশেষজ্ঞরা।