বরিশাল অফিস :: বাংলাদেশ-ভারত নৌ পথে দ্বিতীয় প্রমোদ ভ্রমণের সূচনা হল বুধবার সকালে। ইংরেজী নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে ঐতিহ্যের নগরী কোলকাতায় যে বিশাল আয়োজন চলছে, তাতে অংশ গ্রহণের লক্ষ্যেই ‘কার্নিভাল ক্রুজ শিপিং লাইন্স-এর এবারের ভ্রমণ সূচি সাজান হয়েছে বলে জানা গেছে। এরআগে গত ২৯ নভেম্বর ঢাকা থেকে এবং ৪ ডিসেম্বর কোলকাতা থেকে বিপুল সংখ্যক যাত্রী নিয়ে বেসরকারী শিপিং লাইন্স-এর ‘এমভি রাজারহাট-সি’ নামের ২১০ ফুট দীর্ঘ বিলাসবহুল নৌযানটি প্রায় ১শ যাত্রী নিয়ে চলাচল করে।
বুধবার সকাল ১০টায় ‘এমভি রাজারহাট-সি’ ঢাকার ‘হাসনাবাদ কার্নিভাল জেটি’ থেকে যাত্রা করে বৃহস্পতিবার প্রত্যুষে মোংলা বন্দরের উত্তরে পুরাতন চালনা হয়ে পশ্চিমে সুন্দরবনের গহীনে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের ‘আংটিহারা’ চেকপোষ্টে পৌঁছবে দুপুর নাগাদ। সেখানে বাংলাদেশ প্রান্তের কাষ্টমস ও ইমিগ্রেশনের সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে বিকেল নাগাদ নৌযানটি ভারত সীমান্তে প্রবেশ করে শুক্রবার দুপুরের মধ্যে কোলকাতার বাবুঘাটে পৌঁছবে বলে জানা গেছে। আগামী ৩ জানুয়ারী এমভি রাজারহাট-সি কোলকাতা থেকে বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে যাত্রা করার কথা রয়েছে। কর্তৃপক্ষ নৌযানটিতে বরিশাল থেকেও যাত্রীদের ওঠানামার ব্যবস্থা করছেন ।
বিলাসবহুল এ নৌযানটিতে ঢাকা থেকে কোলকাতার একক পথে ৪০% রেয়াত দিয়ে ভ্রমণ কর সমেত সিঙ্গেল স্লিপারের ভাড়া ৬ হাজার, ডাবল স্লিপার ১০ হাজার ২শ’, একক শয্যার কক্ষ ১২ হাজার, দ্বৈত শয্যার কক্ষ ২০ হাজার ৪শ’, ফ্যামিলি কেবিন ২৫ হাজার ২শ, ভিআইপি কেবিন ৩০ হাজার ও প্রিমিয়াম ভিআইপি কেবিন ৫০ হাজার ৪শ’ টাকা নির্ধারন করা হয়েছে। রিটার্ণ টিকেটধারীদের জন্য নৌযানটিতেই থাকার সুবিধা অব্যাহত রেখেছেন কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি যাত্রীদের জন্য ক্যাফেটরিয়া থেকে নির্ধারিত মূল্যে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করার কথা জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। একই সাথে পরিবার নিয়ে ভ্রমণকারীদের সাথে থাকা অনুর্ধ্ব ১০ বছরের দুই বাচ্চার জন্য ভ্রমণ কর পরিশোধ সাপেক্ষে বিনা মাসূলে ভ্রমণের সুযোগও রয়েছে।
১৯৬৫ সালের ৬ সেপ্টেম্বর পাক-ভারত যুদ্ধের দিন বন্ধ হয়ে যাবার প্রায় ৭০ বছর পরে দুই দেশের সরকার প্রধানের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ১৯৭২ সালের নৌ প্রটোকল অনুযায়ী ২০১৯ সালের মার্চে রাষ্ট্রীয় বিআইডিব্লউটিসি তার ‘এমভি মধুমতি’ যাত্রিবাহী নৌযানের সাহায্যে ঢাকা-কোলকাতা-ঢাকা রুটে একটি পরীক্ষামূলক যাত্রি পরিচালন সম্পন্ন করলেও পরে আর কোন অগ্রগতি হয়নি।
এসব কিছু বিবেচনায় নিয়েই বেসরকারী কার্নিভাল ক্রুজ তাদের বিলাসবহুল নৌযানটির সাহায্যে গত মাসেই ঢাকা-বরিশাল-কোলকাতা রুটে বানিজ্যিক ভিত্তিতে যাত্রী পরিবহন শুরু করে। প্রাথমিক অবস্থায় মাসে দুটি ট্রিপে নৌযানটি চলাচলের কথা থাকলেও এখনো মাসে একটি ট্রিপ দিচ্ছে ‘এমভি রাজারহাট-সি’। যাত্রি চাহিদার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে পরবর্তিতে তা বৃদ্ধির আগ্রহের কথাও জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক ইমরান খান রাসেল।