বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জ্বালানি সংকটের কারণে গত দুই মাস ধরে বন্ধ রয়েছে একমাত্র অ্যাম্বুলেন্স সেবা। অকটেনের বকেয়া পরিশোধ না করায় এই সেবা বন্ধ হয়েছে, যার ফলে মুমূর্ষু রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দূরবর্তী হাসপাতালে নেওয়ার সমস্যা তৈরি হয়েছে।
বর্তমানে, রোগীদের স্বজনরা সরকারি অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার করতে পারছেন না এবং বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সে যেতে তাদের প্রায় দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ ভাড়া দিতে হচ্ছে। এতে গরিব ও দুস্থ রোগীদের জন্য আর্থিক চাপ বেড়ে গেছে, আর রোগীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অ্যাম্বুলেন্সটির জ্বালানি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স এম খান ফিলিং স্টেশনে প্রায় ৭ লাখ টাকা বকেয়া রয়েছে, যার কারণে ১১ নভেম্বর থেকে তেল সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাওয়ার জন্য রোগীদের প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার করতে হচ্ছে এবং এই কারণে তাদের খরচ বেড়ে যাচ্ছে।
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, এক কিলোমিটার ভাড়া ১০ টাকা ধরা হলেও সরকারি অ্যাম্বুলেন্স বন্ধ থাকায় এখন রোগীদেরকে প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্সে ২ হাজার থেকে ২.৫ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ করতে হচ্ছে।
রঘুনাথপুর গ্রামের কাজী বশির উদ্দিন জানান, তার বোনের শাশুড়ি অসুস্থ, ডাক্তার তাকে শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু সরকারি অ্যাম্বুলেন্স বন্ধ থাকায় প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্সে যেতে প্রায় ৩ হাজার টাকা খরচ হবে।
অ্যাম্বুলেন্স চালক মো. মহসিন বলেন, ‘প্রতিদিন রোগীর স্বজনরা ফোন করেন, কিন্তু তেল না থাকায় আমি অ্যাম্বুলেন্স চালাতে পারছি না। দুই মাস ধরে অ্যাম্বুলেন্স বন্ধ রয়েছে, তাই অলস সময় কাটাচ্ছি।’
এদিকে, মেসার্স এম খান ফিলিং স্টেশনের ম্যানেজার জানান, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষের বকেয়া পরিশোধ না করায় তেল সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
বাকেরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুমী আক্তার জানান, বর্তমানে প্রায় ৭ লাখ টাকা বকেয়া রয়েছে, এর মধ্যে ৬ লাখ টাকা বরাদ্দ পেয়েছেন এবং বিল প্রক্রিয়াধীন। বিল পাস হলেই দ্রুত অ্যাম্বুলেন্স সেবা পুনরায় চালু করা হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
মো: তুহিন হোসেন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম