মো:আল-আমিন (পটুয়াখালী): জেলার রাঙ্গাবালী উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে বাগানে প্রতি পিস ডাব বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৪০ টাকায়। আর সে ডাব খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হয় ১৫০-১৮০ টাকায়। ফলে, একদিকে কম মূল্যে ডাব বিক্রি করে বাগান মালিকরা ঠকছেন, অন্যদিকে বাড়তি টাকায় ডাব কিনে প্রতারিত হচ্ছেন ভোক্তারা।
ক্রেতা-বিক্রেতারা বলছেন, ডেঙ্গু বিস্তারের সুযোগ নিয়ে হঠাৎ করেই ডাবের বাজার চড়া। আর এ সুযোগে আড়ত, পাইকারি ও খুচরা বাজার প্রতিটি স্তরেই বাড়নো হচ্ছে ডাবের দাম।
ডাব বাগান মালিক ও স্থানীয় পাইকাররা জানান, বাগানে প্রতি পিস ডাব সর্বোচ্চ ৪০ টাকায় কিনে সেগুলো রাজধানীর বিভিন্ন আড়তে পাঠানো হয়। আড়তে যে দাম নির্ধারণ করে দেয়, সেই দামই তাদের নিতে হয়। পরবর্তী সময়ে আড়তদাররা প্রতি পিস ডাব ১০০-১৫০ টাকায় খুচরা বিক্রেতাদের কাছে বিক্রি করেন। আর খুচরা বিক্রেতারা সেই ডাব প্রতি পিস ১৮০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করে থাকেন।
আরো জানা যায়, রাঙ্গাবালীর বিভিন্ন গ্রাম থেকে প্রতিনিয়ত শত শত ডাব ঢাকায় যায়। গাছ থেকে ডাব নামানো ও পরিবহন করে রাজধানীর বিভিন্ন আড়ত পর্যন্ত নিতে প্রতি পিস ডাবে ২০-২৫ টাকার মতো খরচ হয়। সেক্ষেত্রে ঢাকার আড়তে পৌঁছাতে প্রতি পিস ডাবের মূল্য দাঁড়ায় ৬০-৬৫ টাকা। কিন্তু সেই ডাব খুচরা পর্যায়ে তিন গুণ দামে বিক্রি হচ্ছে।
উপজেলার চরমোন্তাজের ডাব বাগান মালিক মো. রুবেল বলেন, পাইকারি ডাব ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে আমরা ডাব বিক্রি করি। তারা বাগানে এসে গাছ থেকে ডাব কিনে নেন। আমরা বাগানের প্রতি পিস ডাব সর্বোচ্চ ৪০ টাকায় বিক্রি করি। আবার শুনছি, এই অল্প টাকার ডাব আড়তে গেলেই দাম বেড়ে ১৫০-১৮০ টাকায় বিক্রি হয়। তাদের হাতবদলে ঢাকায় ডাবের দাম হয় আকাশ ছোঁয়া। এসব আড়তদার ও খুচরা ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কারণে ক্রেতাদের সঙ্গে আমরাও ঠকছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, রাঙ্গাবালীর মাটি ও জলবায়ু নারিকেল উৎপাদনের জন্য উপযোগী। বসতবাড়ি ও বাণিজ্যিকভাবে গড়ে ওঠা বাগানে এই ডাব ও নারিকেল উৎপাদন হয়ে থাকে। স্থানীয় চাহিদা পূরণের পাশাপাশি প্রায় প্রতিদিনই ১ থেকে ২ হাজার ডাব বিভিন্ন শহরে যায়। বর্তমানে এখানে মাঠ পর্যায়ে ৩৫-৪০ টাকায় ডাব বিক্রি হচ্ছে।
সম্প্রতি এক সভায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, ৪০০ টাকা দিয়ে বাংলাদেশে দুটি ডাব কিনতে হবে, আমরা কি সেই পর্যায়ে পৌঁছে গেছি? ডেঙ্গুকে পুঁজি করে ব্যবসায়ীরা প্রতিটি বাজারের ভোক্তাকে জিম্মি করছে।