শিরোনাম

বাছুর দেওয়ার আশ্বাসে জেলেদের কাছ থেকে ঘুষ, মৎস্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা

Views: 49

পটুয়াখালী প্রতিনিধি : প্রান্তিক জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে প্রণোদনা হিসেবে বকনা বাছুর পেতে সরকারি তহবিলে দুই কিস্তিতে জমা দিতে হবে ঘুষের টাকা। তাই জেলে প্রতি বাছুর বিতরণের আশ্বাস দিয়ে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার কয়েকশ জেলে পরিবারের কাছ থেকে দুই কিস্তিতে ৬-১০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ নিয়েছেন উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা মো. মোসলেম উদ্দিন খান (ভারপ্রাপ্ত)।

এমনটাই অভিযোগ উপজেলার কয়েকশ জেলে পরিবারের। এ ঘটনায় ঘুষ দিয়েও বাছুর না পেয়ে ঘুসের টাকা ফেরত পেতে আদালতে মামলা করেছেন ওই সব ভুক্তভোগী জেলেরা।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওই মৎস্য কর্মকর্তা।

ভুক্তভোগী একাধিক জেলে জানান, উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা ইচ্ছামাফিক তালিকা প্রস্তুত করে জেলেদের কাছ থেকে প্রতিটি বকনা বাছুরের অনুকূলে সরকারি তহবিলে টাকা জমা দেওয়ার কথা বলে প্রথম কিস্তিতে ৬-১০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছেন। সর্বশেষ বাছুরগুলো জেলে পরিবারের কাছে হস্তান্তরের সময় পুনরায় অফিস খরচের নামেও বাছুর প্রতি নেওয়া হয় ২ হাজার টাকা। এছাড়াও বাছুর বিতরণের আশ্বাস দিয়ে উপজেলার কয়েকশ জেলে পরিবারের কাছ থেকে বিপুল অংকের টাকা ঘুষ নেয়ার অভিযোগ তোলেন ওই জেলেরা।

এদিকে বাছুর না পেয়ে ঘুষের টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে প্রতিদিন ধরণা ধরেও ফল পাননি। পরে ঘুষের টাকা ফেরত চেয়ে গত ১১ জানুয়ারি মির্জাগঞ্জ ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি মো. আশ্রাফ আলী আকন এবং মির্জাগঞ্জ ইউনিয়নের মৎস্যজীবী মেহেদী হাসান জুয়েল মির্জাগঞ্জ উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন। দুই মামলায় একমাত্র আসামি উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা মো. মোসলেম উদ্দিন খান (ভারপ্রাপ্ত)।

মামলার বাদী মো. আশ্রাফ আলী আকন ও মেহেদী হাসান জুয়েল বলেন, ইলিশ ধরা নিষেধাজ্ঞার সময় সরকারি প্রণোদনা হিসেবে ৩৫-৪০ হাজার টাকা মূল্যের বকনা বাছুর বিতরণ করা হবে বলে আশ্বাস দিয়ে সহজ সরল জেলেদের কাছ থেকে ৬-১০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুস নিয়েছেন ওই সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা মো. মোসলেম উদ্দিন। প্রথম দফায় জেলেদের মধ্যে কেউ কেউ বকনা বাছুর পেয়েছেন। বাকিদের পরবর্তীতে দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়ে আসছিলেন তিনি (সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা)।

তারা আরও বলেন, মনোহরখালী গ্রামে বকনা বাছুর দেবেন বলে ২২ জনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে মাত্র দুজন জেলেকে ২টি বকনা বাছুর দিয়েছেন। বাকিরা টাকা ফেরত চাইতে গেলে নানা টালবাহানা শুরু করেন। পরে ঘুষের টাকা ফেরত পেতে বাধ্য হয়ে আমরা আদালতে মামলা করেছি।

উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা মো. মোসলেম উদ্দিন খান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী যাচাই-বাছাই করে প্রকৃত জেলেদের বকনা বাছুর দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, প্রণোদনা হিসেবে ১৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা বরাদ্দ পেয়েছি। তা দিয়ে ৫৫টি বকনা বাছুর ক্রয় করে বিতরণ করা হয়েছে। এ বছর ৮০ জন জেলের তালিকা করে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে পরবর্তীতে জেলেদের মধ্যে বকনা বাছুর বিতরণ করা হবে। তবে ঘুষ লেনদেনের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *