এ বছরও রাজধানী ঢাকার উপকণ্ঠে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার পূর্বাচলের ৪ নম্বর সেক্টরে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী এক্সিবিশন সেন্টারে (বিবিসিএফইসি) বাণিজ্যমেলার আয়োজন করা হয়েছে।
১৯৯৫ সাল থেকে যথারীতি বছরের প্রথম দিন অর্থাৎ ১ জানুয়ারি থেকে শুরু হয় ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা। তবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে ২০২৪ সালের বাণিজ্যমেলা শুরুর সময় ২০ দিন পেছানো হয়েছে।
ঢাকার মানুষের জনভোগান্তি কমাতে গত দুই বছর ধরে, অর্থাৎ ২০২২ সাল থেকে পূর্বাচলের বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে বাণিজ্যমেলা স্থানান্তর করে সরকার। এবার সেখানে তৃতীয়বারের মতো ২৮তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা বসছে। এর আগে ঢাকার শেরেবাংলা নগরে বাণিজ্যমেলা আয়োজন করা হতো।
দেশের পণ্য প্রদর্শনীর সবচেয়ে বড় আয়োজন ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা। দেশীয় পণ্যের পাশাপাশি প্রতিবছর ভারত, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড, তুরস্ক, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, হংকং, সিঙ্গাপুর, নেপালসহ বিভিন্ন দেশের ব্যবসায়ীরা তাদের তৈরি পণ্য নিয়ে আসেন এই মেলায়।
গত বছর বাণিজ্যমেলায় দেশ-বিদেশের ৩৩১টি স্টল, প্যাভিলিয়ন ও মিনি প্যাভিলিয়ন ছিল। বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সূত্রে জানা গেছে, এবারের মেলায় দেশ-বিদেশের মোট ৩৩০টি স্টল, প্যাভিলিয়ন ও মিনি প্যাভিলিয়ন থাকবে। যার মধ্যে বিদেশি স্টল থাকবে ১৫ থেকে ১৮টি।
গত বছর বাণিজ্যমেলায় শতকোটি টাকার পণ্য বেচাকেনা হয়েছিল। এবছর ব্যবসা আরও ভালো হবে বলে আশা করছে মেলায় অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠানগুলো।
জানা গেছে, দেশীয় বস্ত্র, মেশিনারিজ, কার্পেট, কসমেটিকস অ্যান্ড বিউটি এইডস, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস, পাট ও পাটজাত পণ্য, গৃহ সামগ্রী, চামড়া ও জুতাসহ চামড়াজাত পণ্য, স্পোর্টস গুডস, স্যানিটারিওয়্যার, খেলনা, স্টেশনারি, ক্রোকারিজ, প্লাস্টিক, মেলামাইন পলিমার, হারবাল ও টয়লেট্রিজ, ইমিটেশন জুয়েলারি, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, ফাস্টফুড, হস্তশিল্পজাত পণ্য, হোম ডেকর, ফার্নিচার ইত্যাদি পণ্য মেলায় প্রদর্শিত হবে।
ইপিবি জানিয়েছে, গত বছর বাণিজ্যমেলায় প্রবেশে টিকিটের দাম ছিল বড়দের জন্য ৪০ টাকা আর শিশুদের জন্য ২০ টাকা। তবে এ বছর টিকিটের দাম কিছুটা বাড়তে পারে।
প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা চলবে। ছুটির দিন মেলা চলবে রাত ১০টা পর্যন্ত। মেলায় দর্শনার্থীদের যাতায়াতের জন্য রাজধানীর ফার্মগেট ও কুড়িল বিশ্বরোড থেকে আলাদা বাস ছাড়বে।
দেশীয় পণ্যের প্রচার, প্রসার, বিপণন, উৎপাদনে সহায়তার লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ইপিবির যৌথ উদ্যোগে ১৯৯৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত এ মেলা হতো শেরেবাংলা নগরে। কোভিড মহামারির কারণে ২০২১ সালে মেলার আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। এরপর মহামারির বিধিনিষেধের মধ্যে ২০২২ সালে প্রথমবার মেলার আয়োজন করা হয় পূর্বাচলে বিবিসিএফইসিতে। এবার তৃতীয়বারের মতো স্থায়ী ভেন্যু বাংলাদেশ-চীন এক্সিবিশন সেন্টারে বাণিজ্যমেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
চীনের অর্থায়নে পূর্বাচলে স্থায়ী বাণিজ্যমেলা কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। এখন থেকে প্রতি বছর এখানেই আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার আসর বসবে।