শিরোনাম

বিনাচিকিৎসায় ২ বছর ধরে শিকল বন্দি মানুষিক ভারসাম্যহীন নাজমা

Views: 42

বরিশাল অফিস :: ‘সাত-আট বছর থেকে মানষিক রোগে আক্রান্ত হয়ে পরেন গৃহবধু নাজমা আক্তার (৩৫)।’তবে তিন বছর পূর্বে স্বামী রহিম হাওলাদারের মৃত্যুর পরপরই পুরো মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন তিনি।’পরিবারের অস্বচ্ছলতার কারনে সুচিকিৎসা করাতে পারেনি বৃদ্ধ বাবা’।

তবে স্থানীয় বিভিন্ন কবিরাজের কাছে চিকিৎসা করিয়েছেন,’তাতে লাভ হয়নি। ফলে গত দুই বছর যাবত শিকল বন্দি হয়েই মানববেতর জীবনযাপন করে আসছেন তিন মেয়ে ও এক ছেলের জননী নাজমা। এ মর্মান্তিক ঘটনাটি বরিশালের গৌরনদী উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের সালতা গ্রামের। মানসিক ভারসাম্যহীন নাজমা সালতা গ্রামের বৃদ্ধ উমর আলী হাওলাদারের মেয়ে।

রোববার সকালে সরেজমিন নাজমার বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে,’ছোট্ট একটি টিনের চালাঘরের খুঁটির সঙ্গে শিকল দিয়ে এক পা বেঁধে রাখা হয়েছে নাজমাকে। ঝড়-বৃষ্টি, শীত-গ্রীষ্মে ওই চালাঘরের মেঝেতে খরের ওপর শুয়ে কিংবা ঘরের দরজার সামনে বসে সারাদিন শিকলে বন্দি হয়েই দিন কাটে তার। নাজমার বৃদ্ধ মা মনোয়ারা বেগম জানান,’তিন বছর আগে মারা যায় নাজমার স্বামী রহিম হাওলাদার। এরপর পুরো মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে সে। অন্যত্র যাতে চলে যেতে না পারে সেজন্য গত দুই বছর যাবত তাকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখতে হচ্ছে।

তিনি আরও জানান,’যেখানে আমাদের তিন বেলা খাবার জুটেনা সেখানে মেয়েকে সুচিকিৎসা করাই কিভাবে? তাই বাধ্য হয়েই মেয়েকে শিকল দিয়ে বেধে রেখেছি।

স্থানীয় বাসিন্দা রিফাত সরদার,’মাসুম ফকির জানান, পরিবারটি এতটাই অস্বচ্ছল যে মানসিক ভারসাম্যহীন গৃহবধুকে সুচিকিৎসা করানোর মত সক্ষমতা তাদের নেই।

এছাড়াও পরিবারের একজন মাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তিনিও ষাটোর্ধ্ব বয়স্ক। তার ওপরই সাত সদস্যের ভরনপোষনের দায়িত্ব।’পরিবারটি প্রকৃতপক্ষেই মানববেতর জীবনযাপন করে আসছে। রাষ্ট্রীয় ও সমাজের বৃত্তবানদের সহযোগিতায় সুচিকিৎসা পেয়ে শিকল বন্দি নাজমা আবার স্বাভাবিক
জীবনে ফিরে আসবে এমনটাই প্রত্যাশা পরিবার ও স্থানীয়দের’।

‘বরিশাল গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আবু আবদুল্লাহ খান জানান,’বিষয়টি কেবলই গণমাধ্যম কর্মীদের মাধ্যমে জানতে পারলাম। এবিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে আশ্বাস দেন।

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *