শিরোনাম

বিপন্ন উপকূলের বন্যপ্রাণী

Views: 65
বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস আজ
পটুয়াখালী প্রতিনিধি :

আজ বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস। জাতিসংঘভুক্ত দেশগুলো প্রতি বছর ৩ মার্চ এ দিবসটি পালন করে থাকে। বাংলাদেশেও বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হবে। বাংলাদেশে কয়েক দশক ধরে আশঙ্কাজনকভাবে কমছে বন্যপ্রাণী। বনভূমি উজাড় হওয়ার ফলে এসব প্রাণী লোকালয়ে প্রবেশ করায় পিটুনিতে মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে। এ ছাড়া নানা প্রতিবন্ধকতা তৈরি হওয়ায় বিপন্ন হচ্ছে উপকূলের বন্যপ্রাণীও।

২০১৩ সালের ২০ ডিসেম্বর জাতিসংঘের ৬৮তম সাধারণ অধিবেশনে এই দিনটিকে বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ২০১৪ সালে প্রথম এ দিবসটি পালন করা হয়। বিশ্বের বন্যপ্রাণী এবং উদ্ভিদকুলের প্রতি গণসচেতনতা বাড়ানো দিবসের মূল লক্ষ্য।

একটা সময় অহরহ বন্যপ্রাণীর দেখা মিললেও এখন আর মেলে না। শোনা যায় না বসন্তে কোকিলের কুহু ধ্বনি। পচা আর মরা কোনো প্রাণী খেতে শকুন কিংবা কাক আসে না। এমনকি এসব বন্যপ্রাণী এখন বিলুপ্তির পথে।

ইতোমধ্যে বিলুপ্ত হয়ে গেছে প্রায় তিনশ প্রজাতির বন্যপ্রাণী। বিলুপ্তির ঝুঁকিতে রয়েছে আরও শখানেক। প্রকৃতির প্রতি মানুষের নৃশংসতা, পরিবেশদূষণ ও পরিবর্তিত জলবায়ুর কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করেন প্রাণী বিশেষজ্ঞরা।

তাদের মতে, সময়ের সঙ্গে পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা আরও জোরালো হচ্ছে। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে আরও ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ প্রাণী বিলুপ্ত হতে পারে।

ওয়াইল্ড লাইফ ট্রাস্ট বাংলাদেশ (ডব্লিউটিবি) ও দ্য ওয়ার্ল্ড কনজারভেশন ইউনিয়ন (আইইউসিএন) বাংলাদেশ শাখার এক জরিপে দেখা গেছে, ইতোমধ্যে দেশের প্রায় দেড়শ প্রজাতির বন্যপ্রাণী, মেরুদণ্ডী প্রাণীর ১৩টি, ৪৭ প্রজাতির দেশি পাখি, ৮ প্রজাতির উভচর ও ৬৩ প্রজাতির সরীসৃপ, স্তন্যপায়ী প্রাণীর ১০টি মিলিয়ে প্রায় তিনশ প্রজাতির বন্যপ্রাণী বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এ ছাড়া বিপন্ন ৪৩ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী। একইভাবে বিপন্ন অবস্থায় রয়েছে ১০৬ প্রজাতির নলবাহী উদ্ভিদ। বিশেষ করে উপকূলীয় অঞ্চলে বন্যপ্রাণীর ব্যাপক বিনাশ চলছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের পাশাপাশি বন্যপ্রাণী শিকার, বাসস্থান দখল করে হোটেল, মোটেল এবং রিসোর্ট নির্মাণ, খাদ্যাভাবসহ নানা কারণেই বন্যপ্রাণীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমছে।

পরিবেশবাদী সংগঠনের কর্মীরা বলছেন, খাদ্য আর বাসস্থানের সংকট প্রকট হওয়ায় বন্যপ্রাণীর এমন সংকট দেখা দিয়েছে। তারা আরও জানিয়েছেন, নিষ্ঠুরভাবে বন উজাড়, নদীর নাব্য হ্রাস, অপরিকল্পিত নগরায়ণ এবং পাখি শিকারিদের ফাঁদে উপকূল থেকে বন্যপ্রাণীর আশঙ্কাজনকভাবে বিলুপ্তি ঘটছে।

অ্যানিমেল লাভারস অব পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা শাখার সদস্য মিরাজ মিজু বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বনাঞ্চল ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া নানা স্থাপনা নির্মাণ, বন কর্মকর্তাদের উদাসীনতায় বন উজাড় হওয়াও বন্যপ্রাণী কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ।

কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর রেঞ্জের কর্মকর্তা আবুল কালাম বলেন, উপকূল থেকে প্রতি বছরই কমছে বন্যপ্রাণী। তবে আমরা সচেতন হলে বিলুপ্তর পরিমাণ কমে আসবে।

বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (উপকূলীয় বন বিভাগ) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, আধুনিক নগরায়ণ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আশঙ্কাজনকভাবে বন্যপ্রাণীর উপস্থিতি কমছে, আমরা বন উজাড় থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করছি সব সময়।

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *