বর্তমানে বিশ্বজুড়ে বিবাহবিচ্ছেদের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এই হার সবচেয়ে বেশি। পরিসংখ্যান বলছে, দেশটিতে প্রতি ১০টি বিবাহের মধ্যে প্রায় ৪-৫টির সমাপ্তি ঘটে বিচ্ছেদের মাধ্যমে। এর মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে নারীদের ইচ্ছায়। কিন্তু কেন নারীদের ঝোঁক বেশি?
নারীদের ওপর মানসিক চাপ
গবেষণায় দেখা যায়, বিবাহিত জীবনে পুরুষদের তুলনায় নারীরা বেশি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন। সন্তান প্রতিপালন, পারিবারিক দায়িত্ব পালন, এবং অফিসের কাজ—সবকিছু সামলানোর পরেও তাদের অনেক সময় স্বামী কিংবা পরিবারের কাছ থেকে কটূক্তি সহ্য করতে হয়। যখন এই পরিস্থিতি দীর্ঘস্থায়ী হয়, তখন নারীরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন এবং একসময় বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন।
সমর্থনের অভাব
সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, নারীরা সবসময় তাদের সঙ্গীর কাছ থেকে মানসিক সমর্থন প্রত্যাশা করেন। কিন্তু যখন সঙ্গীর অসমর্থন, বিদ্রুপ, কিংবা মানসিক অত্যাচারের শিকার হন, তখন তাদের মধ্যে একাকিত্ব তৈরি হয়। এই মানসিক চাপ দীর্ঘস্থায়ী হলে তা বিবাহবিচ্ছেদের রূপ নেয়।
নারীদের আর্থিক স্বাধীনতা
একটি বড় কারণ হলো, এখন নারীরা আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী। স্বামীর উপর নির্ভরশীল না হওয়ায় তারা আর মানসিক কিংবা শারীরিক নির্যাতন সহ্য করতে চান না। প্রতারণা, অবহেলা কিংবা বিশ্বাসঘাতকতার সম্মুখীন হলে নারীরা নিজেরাই বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন।
পুরুষদের ভূমিকা
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, অনেক পুরুষই বিবাহবিচ্ছেদে ভয় পান। কারণ প্রথমে ডিভোর্স চাইলে স্ত্রীর সম্পত্তির পাওনা মেটাতে হয়। তাই অনেক সময় তারা চুপচাপ পরিস্থিতি এড়িয়ে চলে স্ত্রীকে বিবাহবিচ্ছেদের দিকে ঠেলে দেন।
বিশেষজ্ঞদের মতামত
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি কোনো নারী শারীরিক কিংবা মানসিক নির্যাতনের শিকার হন, তাহলে বিবাহবিচ্ছেদই হতে পারে তার মুক্তির উপায়। তবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত।
মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম