বরিশাল অফিস:; বরিশালের আগৈলঝাড়ায় বেসরকারি হাসপাতালের ডাক্তারের ভুল রিপোর্টের কারণে রোগীর অর্থনৈতিক ক্ষতিসহ হয়রানির শিকার হয়েছেন। ওই রোগীকে অন্যত্র পরীক্ষা করালে কোনো সমস্যা ধরা না পড়ায় ভুল রিপোর্টের প্রতিবাদ করায় হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সরা রোগীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন।
ওই ডাক্তারের দেওয়া ওষুধ সেবন করলে রোগীর অবস্থা আরও খারাপ হতো বলে জানান উপজেলা সরকারি হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ডা. বখতিয়ার আল মামুন। এ ঘটনায় রোগী সিয়াম উপজেলা হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগে জানা যায়, উপজেলার গৈলা ইউনিয়নের ফুল্লশ্রী গ্রামের মানিক সরদারের ছেলে সিয়াম সরদার (২৫) পেটে ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে ১৩ মার্চ রাতে আগৈলঝাড়া বাইপাস সড়কের পাশে বেসরকারি আগৈলঝাড়া দুস্থ মানবতা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন। এ সময় ওই হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. নেয়ামত উল্লা সজীব রোগী দেখে তাকে ইসিজি করতে বলেন। ইসিজি করার পূর্বেই ওই রোগীর জটিল রোগ হয়েছে বলে জানান ডা. নেয়ামত উল্লা। পরে ইসিজি রিপোর্ট দেখে ডা. নেয়ামত উল্লা বলেন- হার্টের সমস্যা দেখা দিয়েছে। তাৎক্ষণিক সেবনের জন্য সে কয়েকটি হার্টের ওষুধ লিখে দেন।
রোগী উপজেলা সদরের একাধিক দোকান থেকে ওষুধ কিনতে গেলে তাকে দোকানিরা খেতে নিষেধ করেন। পরে দুস্থ মানবতা হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. নেয়ামত উল্লা গভীর রাতে দ্রুত তাকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে রেফার করেন। পরে রোগী সিয়াম সরদার বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে গিয়ে পরীক্ষা করালে সেখানে ইসিজিতে হার্টের কোনো রোগ ধরা পড়েনি। পর দিন ১৪ মার্চ পুনরায় আগৈলঝাড়া উপজেলা কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বখতিয়ার আল মামুনকে দেখালে তিনিও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বলেন সিয়ামের হার্টের কোনো রোগ নেই। এতে রোগী ও তার পরিবারের অনেক হয়রানিসহ অর্থ ব্যয় হয়েছে।
রোগী সিয়ামের বড় ভাই সজীব সরদার বলেন, আগৈলঝাড়া দুস্থ মানবতা হাসপাতালে ডাক্তারের ভুল রিপোর্টের কারণে আমার ভাইকে নিয়ে বরিশাল শেবাচিম ও গৈলা হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষা সঠিক রিপোর্ট পেতে অর্থ ব্যয়সহ হয়রানির শিকার হয়েছি। আমরা এ ঘটনার বিচার দাবি করছি।
এ ব্যাপারে আগৈলঝাড়া দুস্থ মানবতা হাসপাতালের ডা. নেয়ামত উল্লা সজীব বলেন, রোগী যখন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন, তখন তার এ সমস্যা ছিল। পরবর্তীতে তার সমস্যা কমে যায়। রোগী বরিশাল যেতে চাইলে আমরা বরিশাল রেফার করে দিয়েছি।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বখতিয়ার আল মামুন সিরামের লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, তার হার্টের কোনো রোগ নেই। আগৈলঝাড়া দুস্থ মানবতা হাসপাতালে যে পরীক্ষা করা হয়েছিল তাদের রিপোর্টে ভুল ছিল। অভিযোগটি আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে প্রেরণ করা হবে।