শিরোনাম

ভারতে ফিরে যেতে চায় বরিশালে পাচার হয়ে আসা সঙ্গীতা

Views: 78

বরিশাল অফিস ::  নিজ জন্মস্থান ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বাবা-মায়ের কাছে ফিরে যেতে চায় বরিশালে অবস্থানরত সঙ্গীতা মন্ডল। সে কলকাতার দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার ডায়মন্ড হারবারের ভূরগাছি গ্রামের মেয়ে। তার পিতা গুরুপদ মন্ডল এবং মা পার্বতী মন্ডল বলে জানা গেছে।

বরিশালের বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটিরে শিল্প কর্পোরেশন (বিসিক) শিল্প নগরীর একটি প্রতিষ্ঠান বিসমিল্লাহ পলিমার এ কর্মরত সঙ্গীতা সঙ্গে কথা হলে চন্দ্রদ্বীপ নিউজকে তিনি এ কথা বলেন।

বিসমিল্লাহ পলিমার ও প্যাকেজিং এর স্বত্বাধিকারী নাজমুন নাহার রিনা জানান, বরিশালের জেলা প্রশাসক শহীদুল ইসলাম এবং জেলা প্রশাসনের প্রবেশন কর্মকর্তা সাজ্জাদ পারভেজ এর সহযোগিতায় সমাজসেবা দপ্তরের পুনর্বাসন কেন্দ্র থেকে কয়েকজন মেয়েকে আমার এই প্রতিষ্ঠানে কাজে দেয়া হয়েছে। তাদের একজন সঙ্গীতা মালা। সে এখানে কাজ করছে বটে তবে সবসময় মনমরা হয়ে থাকে। জিজ্ঞেস করলেই কান্নাকাটি করে ও বলে ‘আমি আমার বাবা-মায়ের কাছে যেতে চাই।

সঙ্গীতা মালা জানান, তার যখন সাতবছর বয়স তখন একজন আত্মীয় তাকে গোপনে বাংলাদেশের মাদারীপুরের এক দালালের কাছে বিক্রি করে দেয়। বর্তমানে তার বয়স চৌদ্দ বছর। এতো কম বয়সেই তাকে জীবনের অনেক জটিলতা মোকাবেলা করতে হয়েছে। সর্বশেষ দুবছর আগে মাদারীপুর থানা পুলিশের সহযোগিতায় হাসপাতাল ও আদালত থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়েছে।

কিশোরী সঙ্গীতা বলেন, আমার বাবা-মা ও আত্মীয় স্বজন তো জানেন না আমি কোথায় আছি। আমার বাড়ি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনায়। সেখানে ডায়মন্ড হারবারের ভূরগাছি গ্রামে এখনো আমার বাবা-মা রয়েছেন। আমার চাচার নাম রাহুল মন্ডল। নিজ জন্মস্থান ও মা-বাবার কথা মনে করে কান্নায় ভেঙে পড়ে সঙ্গীতা মন্ডল। তাকে শান্তনা দিতে ছুটে আসে সহকর্মী বিসমিল্লাহ পলিমার এর অন্য মেয়েরা।


বরিশালের সামাজিক আন্দোলনের নেতা কাজী মিজানুর রহমান জানান, কলকাতার দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার শিশু সঙ্গীতা এখন কিশোরী। সে বাবা-মা ভাই-বোনের কাছে ফিরে যেতে চাইবে এটাই স্বাভাবিক। এজন্য সরকারি উদ্যোগে ভারতীয় দূতাবাসের সাথে যোগাযোগ করা, তার সম্পর্কে জানানো।

তিনি বলেন, বাবা-মা ভাই-বোন হয়তো তাকে চিনতেই পারবে না। কিন্তু তার ফিরে যাওয়ার আকুতী হয়তো একদিন পৌঁছে যাবে বাবা-মায়ের কাছে। বরিশালে আমরা শুধু তাকে প্রচারের চেষ্টাই করতে পারি, মূল ভুমিকা সরকারের।

বরিশালের প্রবেশন কর্মকর্তা সাজ্জাদ পারভেজ বলেন, সঙ্গীতাকে মাদারীপুর আদালতের মাধ্যমে আমরা সামাজিক মেয়েদের পুনর্বাসন কেন্দ্রে নিয়ে আসি। ওর সুন্দর জীবনের জন্য পরিচর্যা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করি। সেখান থেকে সঙ্গীতা এখন স্বাবলম্বী হতে বরিশাল বিসিকের বিসমিল্লাহ পলিমার এ নাজমুন নাহার রিনার কাছে কাজ করছে। সে তার নিজ বাবা-মা ভাই-বোন এর কাছে ফিরে যেতে চায়। আমাদের পক্ষ থেকে তাকে ফিরিয়ে দেয়ার চেষ্টা চলছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তার কোনো আত্মীয় পরিজন যোগাযোগ করেননি।

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *