চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক : ভিটামিন ডি শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এর ঘাটতি শরীরের নানা রকম ঝুঁকির কারণ হয়।
খাদ্যে ভিটামিন ডির অপ্রতুলতা এবং সূর্যরস্মির অভাবে অনেকের শরীরেই ভিটামিন ডি-র ঘাটতি হয়। ভিটামিন ডি শরীরের বিভিন্ন কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এর অভাবে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে যেকোনো বয়সী মানুষ।
যেসব কারণে ভিটামিন ডি-র ঘাটতি হতে পারে, তাদের মধ্যে নিম্নলিখিত কারণগুলো উল্লেখযোগ্য। যেমন :
• শরীরের রং বেশি কালো হওয়া
• বয়স্ক হলে
• অতিরিক্ত ওজন
• পর্যাপ্ত মাছ বা দুধ না খাওয়া
• অতিরিক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার করা
• সবসময় ঘরে বসে থাকা ইত্যাদি
ভিটামিন ডি কমে যাওয়ার লক্ষণ
১. ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া থেকে বাঁচাতে সাহায্য করে ভিটামিন ডি। প্রায়ই সর্দি-কাশি বা ফ্লুতে ভোগার জন্য দায়ী হতে পারে ভিটামিন ডি-এর কম মাত্রা।
২. ভিটামিন ডি-এর অভাবে হাড়, জয়েন্ট, পিঠ ও স্নায়ুতে ব্যথা হতে পারে।
৩. ভিটামিন ডি-এর অভাবের সঙ্গে বিষণ্নতার সম্পর্ক রয়েছে। কোনো কারণ ছাড়াই বিষণ্ন লাগলে ভিটামিন ডি-এর মাত্রা পরীক্ষা করে নিন।
৪. অত্যধিক চুল পড়া হতে পারে ভিটামিন ডি কমে যাওয়ার লক্ষণ।
৫. অস্ত্রোপচার বা আঘাতের পরে ধীরে ধীরে ক্ষত নিরাময় হওয়া ভিটামিন ডি অভাবের লক্ষণ হতে পারে।
৬. বাড়তি ওজনের কারণ হতে পারে অপর্যাপ্ত ভিটামিন ডি।
৭. ক্লান্তবোধ করা ভিটামিন ডি কমে যাওয়ার লক্ষণ। শরীরের এনার্জি লেভেল কমতে শুরু করে এই ভিটামিনের অভাবে, ফলে অল্প কাজ করেও লাগতে পারে ক্লান্ত।
ভিটামিন-ডি পাওয়া যায় যেসব খাবারে
ভিটামিন-ডি একটি ফ্যাট সলিউবল সিকুস্টারয়েড। এর কাজ হচ্ছে দেহের অন্ত্র (ইনটেসটাইন) থেকে ক্যালসিয়ামকে শোষণ করা; এটি আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম এবং ফসফরাসকেও দ্রবীভূত করে। ভিটামিন-ডি নিয়ে আগে এত কথা না হলে বর্তমানে এ বিষয় নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। পুষ্টিবিদরা প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ভিটামিন-ডি জাতীয় খাবার রাখার পক্ষে জোর দিচ্ছেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিটামিন-ডি’র অভাবে শিশুদের দেহের হাড় ঠিকমতো বৃদ্ধি পায় না এবং হাড় বাঁকা হয়ে যায়। এর অভাবে বয়স্ক লোকদের হাড় নরম হয়ে যায়; আলঝেইমার রোগ হতে পারে। যাঁদের দেহে ভিটামিন-ডি’র অভাব রয়েছে, তাঁদের অ্যাজমার সমস্যা হতে পারে।
মাছ
বিভিন্ন মাছে রয়েছে ভিটামিন-ডি। বিশেষ করে চর্বিযুক্ত মাছ, যেমন : স্যালমন, সারদিনস, টুনা, ম্যাককেরেল ইত্যাদি। দৈনিক ভিটামিন-ডি’র চাহিদার ৫০ শতাংশ পূরণ হতে পারে একটি টুনা মাছের স্যান্ডউইচ বা তিন আউন্স ওজনের একটি স্যালমান মাছের টুকরো থেকে।
মাশরুম
মাশরুমে রয়েছে ভিটামিন-ডি। পরটোবেললো মাশরুম সূর্যের আলোয় বড় হয়, এর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন-ডি। তাই চাহিদা পূরণে নিয়মিত মাশরুম খেতে পারেন।
কমলার জুস
বাজারে কিছু ভালো ব্র্যান্ড রয়েছে, যারা কমলার জুস তৈরিতে ভিটামিন-ডি যোগ করে। অন্যান্য জুসের মধ্যে এটি দেওয়া হলেও কমলার জুস ভিটামিনের উপাদান ধরে রাখতে পারে। তাই ভিটামিন-ডি’র জন্য ভালো ব্র্যান্ডের জুসও খাওয়া যেতে পারে। তবে খাওয়ার আগে প্যাকেটের গায়ে দেখে নিন, কী কী উপাদান দিয়ে তৈরি হয়েছে এটি।
ডিম
ডিমে হালকা পরিমাণ ভিটামিন-ডি রয়েছে। তবে যাঁদের উচ্চ রক্তচাপ এবং উচ্চ কোলেস্টেরল রয়েছে, তাঁদের ডিমের কুসুম খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে।
অঙ্গপ্রত্যঙ্গ জাতীয় খাবার
অঙ্গপ্রত্যঙ্গ জাতীয় খাবারে ভিটামিন-ডি রয়েছে, যেমন : গরুর মাংসের লিভারে ভিটামিন-ডি আছে। তবে এটা রান্না করে খাওয়ার চেয়ে অনেকেই হয়তো দুধ থেকে ভিটামিন-ডি খেতে বেশি পছন্দ করবেন।