তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশ যেমন দৈনন্দিন জীবনকে সহজ করে দিয়েছে, তেমনি এর নেতিবাচক প্রভাবও বেড়েছে। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং অনলাইন প্লাটফর্মগুলোতে সাইবার অপরাধের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। সাইবার বুলিং, প্রতারণা, হ্যাকিং এবং ক্লোনিংয়ের মতো অপরাধে সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
সম্প্রতি ভারতের বেঙ্গালুরুর এক বৃদ্ধ হোয়াটসঅ্যাপ ভিডিও কল প্রতারণার ফাঁদে পড়ে ১ লাখ ৯৪ হাজার টাকা হারিয়েছেন। ৬৮ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি গত ৩০ নভেম্বর একটি অচেনা হোয়াটসঅ্যাপ ভিডিও কল পান। কলের অপর প্রান্তে থাকা ব্যক্তি নিজেকে মুম্বাই ক্রাইম ব্রাঞ্চের অফিসার পরিচয় দেন এবং একটি থানায় বসে থাকার ভুয়া দৃশ্য দেখান।
প্রতারক ওই বৃদ্ধকে জানায়, তিনি নাকি ব্যবসায়ী নরেশ গোয়েলের অর্থ জালিয়াতি মামলায় অভিযুক্ত। এরপর তাকে এক সপ্তাহ ধরে ডিজিটাল গ্রেপ্তার করে রাখে প্রতারক। এরই মধ্যে বৃদ্ধের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য হাতিয়ে নেয় এবং ধাপে ধাপে ১ লাখ ৯৪ হাজার টাকা তুলে নেয়। বিষয়টি বুঝতে পেরে বৃদ্ধ দ্রুত বেঙ্গালুরুর এক থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
এই বৃদ্ধের ঘটনা একা নয়। সম্প্রতি এই ধরনের প্রতারণার ঘটনা বাড়ছে। কয়েকদিন আগেই কেরলের এক ব্যক্তি হোয়াটসঅ্যাপে একটি ভুয়া অ্যাপ ডাউনলোড করে ৪ কোটি টাকারও বেশি হারিয়েছেন। বিষয়টি দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সাইবার ক্রাইম কোঅর্ডিনেশন সেন্টারে অভিযোগ হওয়ার পর তদন্ত শুরু হয়।
তদন্তে জানা যায়, এই ধরনের প্রতারণাচক্র বিদেশ থেকে নিয়ন্ত্রিত হলেও প্রতারকদের এপিসেন্টার দিল্লি-এনসিআর এলাকা। সাইবার অপরাধে লিপ্ত এসব চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে প্রধান হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে।
সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই)-এর মতে, এই ধরনের সাইবার অপরাধে প্রায় ৪ হাজারেরও বেশি মানুষ প্রতারণার শিকার হয়েছেন। বর্তমানে ৩ হাজারেরও বেশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অ্যাকাউন্টের ওপর নজরদারি চালাচ্ছে সংস্থাটি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অচেনা বা সন্দেহজনক কলের উত্তর দেওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। পাশাপাশি প্রাইভেসি সুরক্ষা বাড়াতে প্রযুক্তিগত সচেতনতা জরুরি।
মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম