– জোয়ারে ভেসে গেছে তীররক্ষা বাঁধের নির্মাণসামগ্রী
– হারিয়ে গেছে ৩০০ টনের একটি বার্জ
বরিশাল অফিস :: ভোলায় ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে প্রায় ১০ কিলোমিটার বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়া বাঁধের ১২টি পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ভেঙে ১০-১৫টি গ্রাম পানিতে প্লাবিত হয়ে গেছে। ঘূর্ণিঝড় চলে গেলেও এখনো দিনে দুইবার জোয়ারের সময় ভেঙে যাওয়া অংশ দিয়ে গ্রামে পানি ঢুকছে। তাই পানিতে উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের প্রায় ১০ হাজার লোক এখন পানিবন্দী।
এ ছাড়াও নদীর তীর সংরক্ষণ কাজের জন্য রেথে দেয়া সিমেন্ট ও বালুসহ বিভিন্ন নির্মাণসামগ্রী রেমালের জলোচ্ছ্বাসে ভেসে গেছে। এতে করে তীর সংরক্ষণ নির্মাণকাজ প্রায় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এর পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়ে ইলিশা লঞ্চঘাট এলাকা থেকে একটি ৩০০ টনের বিকে বার্জ নদীর পানিতে হারিয়ে গেছে। ডুবুরি ও ডিজিটাল ডিভাইস দিয়ে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও বার্জটির সন্ধান এখনো পাওয়া যায়নি।
মেঘনা নদীর তীরবর্তী বেড়িবাঁধ এলাকায় সরেজমিন দেখা গেছে, সদর উপজেলার তেঁতুলিয়া নদীর বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের বেশ কয়েকটি জায়গা দিয়ে পানি প্রবেশ করছে। বোরহানউদ্দিন উপজেলার হাসান নগর ইউনিয়নের মেঘনা নদীর তীর সংরক্ষণ কাজের জন্য রাখা নির্মাণসামগ্রী জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তীর সংরক্ষণ কাজের জন্য রাখা প্রায় চার হাজার ব্যাগ সিমেন্ট পানিতে ভিজে শক্ত হয়ে গেছে। সেখানে থাকা নির্মাণ কাজের মিক্সার মেশিনসহ কয়েকটি যন্ত্রপাতিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সৃষ্ট জোয়ারের পানি বিগত ৩০-৪০ বছরেও এত উচ্চতায় ওঠেনি।
ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানায়, রেমালের তাণ্ডবে এ জেলার সাত উপজেলায় প্রায় ১০ কিলোমিটার বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের ক্ষতি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিচ্ছিন্ন উপজেলা মনপুরা। সেখানে প্রায় ৩ দশমিক ২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের ক্ষতি হয়েছে। মনপুরার বেড়িবাঁধের ১২টি পয়েন্ট দিয়ে পানি প্রবেশ করে ৮-১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ওই প্লাকিদ এলাকাগুলো এখন দিনে দুইবার জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হচ্ছে।
এ ছাড়াও উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের সোনারচর ও চরযতিন এলাকার পূর্বপাশের বেড়িবাঁধ সম্পূর্ণ ভেঙে গেছে।
বোরহানউদ্দিন উপজেলার হাসান নগর ইউনিয়নের মেঘনা নদীর তীরবর্তী বাঁধ নির্মানের কাজে নিয়োজিত এস এম জয়েন ভেঞ্চার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থাকা এ জেড এম মনিরুল ইসলাম জানান, মেঘনা নদীর তীর সংরক্ষণ কাজের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে ভাড়া করে আনা একটি ৩০০ টনের বিকে বার্জ সদর উপজেলার ইলিশা ঘাটে বেঁধে রাখা ছিল। ঝড়ের রাতে এ্যাংকর ছিড়ে বার্জটিও হারিয়ে যায়। বার্জ হারিয়ে যাওয়ার ঘটনায় ভোলা সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।
ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ড ডিভিশন-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান মাহমুদ জানান, ঘূর্ণিঝড়ে ভেঙে যাওয়া কিংবা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া বাঁধগুলো এখন তারা মেরামতের কাজে হাত দিয়েছেন। অতি দ্রুত এ বাঁধগুলো সংস্কার করা হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ডিভিশন-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো: হাসানুজ্জামান জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি হওয়া নির্মাণসামগ্রীর বিষয়ে এই মুহূর্তে তাদের কিছুই করণীয় নেই।