ভোলার সাত উপজেলায় জানুয়ারি থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত পানিতে ডুবে ৪০ শিশুর করুণ মৃত্যু ঘটেছে বলে স্বাস্থ্য বিভাগ নিশ্চিত করেছে। যদিও সরকারি হিসাবে এই সংখ্যা ৪০, বেসরকারি সূত্রমতে প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি। অভিভাবকদের অসাবধানতা ও সচেতনতার অভাবকে এ মৃত্যুর মূল কারণ হিসেবে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শিশুদের পানিতে পড়া ও মৃত্যুর হার প্রতি বছর বেড়েই চলেছে। শিশু চিকিৎসকদের মতে, এই সংখ্যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। গত ২৯ অক্টোবর তজুমদ্দিনে পুকুরে ডুবে দুই বোন মারজিয়া (৯) ও রাফিয়া (১০) এবং তাদের বন্ধু মিম (১২) মারা যায়। একই মাসের ১২ অক্টোবর ভোলা সদর ও চরফ্যাশনে পৃথক ঘটনায় জাইফা (৩), সাইফুল (২), আরিয়ান (৪) ও জুনায়েদ (৫) নামের চার শিশুর মৃত্যু হয়। এছাড়া ২৪ নভেম্বর লালমোহনে মো. ফারহান নামে ১ বছরের এক শিশুর পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়।
পানিতে ডুবে নিহত শিশুদের মধ্যে অধিকাংশের বয়স ১ থেকে ৫ বছরের মধ্যে। বর্ষাকালে ঝুঁকির মাত্রা আরও বেড়ে যায়। বর্ষার সময় বাড়ির চারপাশের পুকুর ও ডোবাগুলো পানিতে পূর্ণ থাকায় মুহূর্তের অসাবধানতায় শিশুরা প্রাণ হারায়।
সুজনের জেলা সভাপতি মোবাশ্বের উল্লাহ চৌধুরী একে নীরব দুর্যোগ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “অভিভাবকদের দায়িত্বশীল ভূমিকা ও সচেতনতাই এ ধরনের মৃত্যুর হার কমানোর একমাত্র উপায়।”
বাল্যবিয়ে ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি এ্যাড. সাহাদাত হোসেন শাহিন বলেন, “বাড়ির পুকুর ও ডোবাগুলোর নিরাপত্তা বেষ্টনী দেওয়া এবং শিশুদের সাঁতার শেখানো অত্যন্ত জরুরি।”
ভোলার সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম জানান, “অভিভাবকদের আরও সচেতন হওয়া এবং শিশুদের সাঁতার শেখানো প্রয়োজন। এছাড়া বাড়ির আশপাশের পুকুর ও ডোবার জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করাও জরুরি।”
শিশুদের পানিতে ডুবে মৃত্যু রোধে সম্মিলিতভাবে সচেতনতা বাড়ানো, নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ, এবং সাঁতার শেখানোর উদ্যোগ নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অভিভাবকদের পাশাপাশি সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে।
মো: আল-আমিন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম