শিরোনাম

ভোলার কাঁকড়া যাচ্ছে বিদেশে, বিকল্প কর্মসংস্থানে খুশি জেলেরা

Views: 74

বরিশাল অফিস :: জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত ভোলার মনপুরাসহ কয়েকটি দ্বীপের বেশিরভাগ জেলে পেশা পাল্টে বিকল্প কর্মসংস্থান হিসেবে বেছে নিয়েছেন কাঁকড়া শিকার। মৌসুমজুড়ে কাঁকড়া পাওয়া গেলেও দাম চওড়া থাকায় শীতের সময়ে কাঁকড়া শিকারে আগ্রহ বেশি থাকে জেলেদের।

অল্প পরিশ্রমে বেশি লাভ হওয়ায় এ পেশায় ঝুঁকে পড়ছেন তারা।

ভোলার কাঁকড়ার চাহিদাও বেশ ভালো। এসব কাঁকড়া দেশের গণ্ডি পেরিয়ে চলে যাচ্ছে চীন, হংকং ও মালয়েশিয়াসহ বিদেশে।

তাই পরিবেশবান্ধব উপায়ে কাঁকড়া শিকার ও সংরক্ষণ করে একদিকে যেমন তারা লাভবান হচ্ছেন অন্যদিকে পারিবারিক সংকটও দূর হচ্ছে ভোলার জেলেদের।

জানা গেছে, জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানা কারণে মাছের সংকট দেখা দিয়েছে ভোলার মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীতে। আর এ কারণে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন জেলেরা। ঋলগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন তারা। এই সংকট মোকাবিলায় এবার জেলেরা বিকল্প কর্মসংস্থান হিসেবে দলবদ্ধভাবে নেমে পড়েছেন কাঁকড়া শিকারে।

মনপুরা, চর কুকরি-মুকরি ও নিঝুম দ্বীপের প্রায় ১০ হাজার জেলে বিকল্প কর্মসংস্থান হিসেবে বেছে নিয়েছেন এ কাঁকড়া শিকার। আহরিত কাঁকড়া আড়তে বিক্রি করে পরিবারের খরচ জোগাড় করছেন তারা।

মনপুরার জেলে রতন দাস, শ্রীরাম, লক্ষণ, দিলিপ ও মোরশেদ জাফর বলেন, আগে আমরা মাছ শিকার করতাম। কিন্তু সারাদিন জাল বেয়েও তেমন মাছ পাওয়া যেতে না। এতে দিন দিন ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছি। এখন কাঁকড়া শিকার করি। এতে কিছুটা হলেও সংকট দূর হচ্ছে। প্রতি পিস কাঁকড়া ৫০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি করি আড়তে। বেশি ধরতে পারলে বেশি লাভ।

আড়তদার নীরব দাস বলেন, জেলেদের কাছ থেকে কাঁকড়া সংগ্রহ করে তা ঢাকার আড়তে কেজি প্রতি ৮০০ থেকে ২ হাজার টাকা করে পাই। সেগুলো চলে যায় বিভিন্ন দেশে।

কীভাবে হচ্ছে কাঁকড়া শিকার প্রশ্নে জেলেরা জানান, উপকূলের ছোট ছোট খাল আর জঙ্গলের অল্প পানিতে সাবল, রড ও দড়ি নিয়ে মাটির ভেতর থেকে কাঁকড়া তুলে আনছেন তারা। এসব কাঁকড়া পানিতে পরিষ্কার করে আড়তে বিক্রি করেন।

ভোলার কাঁকড়া চাহিদা বেশি থাকায় পেশা পরিবর্তন করে অনেকেই হয়ে উঠছেন কাঁকড়া শিকারি। এমনটাই জানিয়েছেন মনপুরা ও চর কুকরি-মুকরির বেশ কয়েকজন আড়তদার। তারা বলছেন, দিন দিন কাঁকড়া শিকার জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

এদিকে বিকল্প কর্মসংস্থান হিসেবে কাঁকড়া শিকার আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছে মৎস্যবিভাগ।

মনপুরা উপজেলা মেরিন ফিশারিজ অফিসার মাহমুদুল হাসান বলেন, কাঁকড়া শিকারের করে জেলেরা স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন। তাদের পরিবেশবান্ধব উপায়ে কাঁকড়া শিকার ও সংরক্ষণে আমরা সহায়তা দিচ্ছি। জেলেরাও বিকল্প পেশা হিসেবে ঝুঁকছেন কাঁকড়া শিকারে।

কাঁকড়া শিকারিদের তথ্য মতে জানা গেছে, জেলেদের আহরিত এসব কাঁকড়া ঢাকার উত্তরায় পাইকারি বাজার হয়ে চলে যায় চীন, মালয়েশিয়া এবং হংকংসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রে। সারা মৌসুম কাঁকড়া হলেও শীতের মৌসুমে চাহিদা এবং দাম চড়া থাকে বলে মনে করছেন শিকারিরা।

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *