শিরোনাম

ভোলার তেতুলিয়া নদীতে অবৈধ বালু উত্তোলন: চলছেই পরিবেশগত বিপর্যয়

Views: 5

ভোলার তেতুলিয়া নদীতে অবৈধ বালু উত্তোলনের সাথে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে প্রশাসন, তবে তা থামছেই না। নদীর অবৈধ বালু উত্তোলন চলছে দিনের পর দিন, বিশেষত গভীর রাতে, যার ফলে নদীভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বছরের পর বছর ধরে বালু উত্তোলন চলছে অবাধে, যার ফলে বিলীন হচ্ছে ঘর-বাড়ি, ফসলি জমি, এবং ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নদীর জীববৈচিত্র্য।

তেতুলিয়া নদীতে কোনো বালু মহাল না থাকলেও, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, রাতের অন্ধকারে প্রভাবশালী মহল একযোগে কয়েকটি ড্রেজার দিয়ে লাখ লাখ ঘনফুট বালু উত্তোলন করছে। এর ফলে নদীভাঙন বাড়ছে, এবং বিশেষ করে বর্ষাকালে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে। ভোলার বোরহানউদ্দিন, লালমোহন, এবং তেতুলিয়া নদীর বিভিন্ন চর এলাকাতে এই অবৈধ কার্যক্রম চলতে থাকলেও প্রশাসনের অভিযান মাঝে মাঝে সফল হলেও এর প্রভাব সীমিত হচ্ছে।

**কোস্টগার্ড ও প্রশাসনের অভিযান**

কোস্টগার্ড নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করলেও, অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ হয়নি। কোস্টগার্ডের কঠোর নজরদারি সত্ত্বেও, ড্রেজার মেশিনগুলো রাতের বেলা নদীতে এসে অবাধে বালু উত্তোলন করছে। স্থানীয় মাছ শিকারিরাও অভিযোগ করেন, এসব ড্রেজার মেশিনের কারণে তাদের মাছ ধরার কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে এবং নদীতে প্রচণ্ড শব্দের জন্য মাছ ধরা কঠিন হয়ে পড়ছে।

ভোলা জেলা প্রশাসক মো. আজাদ জাহান বলেন, “তেতুলিয়া নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন একটি গুরুতর অপরাধ। আমরা অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছি এবং শীঘ্রই আরও অভিযান পরিচালিত হবে।” এছাড়া, কোস্টগার্ড জানায়, তাদের সফল অভিযান অব্যাহত রয়েছে, এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দণ্ড কার্যকর করার জন্য প্রশাসন তাদের সাধ্যমতো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

প্রবাহমান তেতুলিয়া নদীকে রক্ষা করা এখন কঠিন হয়ে পড়েছে। নদীর তীরবর্তী এলাকা যেমন চন্দ্রদ্বীপ, নাজিরপুর, কচুয়া, ধুলিয়া ইউনিয়ন, দীর্ঘদিন ধরে নদীভাঙনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। নদী খনন না করা এবং বালু উত্তোলনের ফলে পরিবেশের ভারসাম্যও বিপর্যস্ত হচ্ছে। এতে নদীর জীববৈচিত্র্যও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, যা আগামী দিনে বড় পরিবেশগত সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

এখনো পর্যন্ত অবৈধ বালু উত্তোলন রোধ করা সম্ভব হয়নি, যদিও প্রশাসন ও কোস্টগার্ড বিভিন্ন অভিযান চালাচ্ছে। যদি এই সমস্যার কোনো স্থায়ী সমাধান না করা যায়, তবে ভবিষ্যতে তেতুলিয়া নদী আরো ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং বিপর্যয় আরও বাড়বে।

মো: তুহিন হোসেন,
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চন্দ্রদ্বীপ নিউজ ২৪ ডট কম

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *