শিরোনাম

মহিমান্বিত রাত লাইলাতুল কদর

Views: 53

চন্দ্রদ্বীপ ডেস্ক : ফারসিতে বলা হয় ‘শবে কদর’। আরবিতে ‘লাইলাতুল কদর’। যার অর্থ মহিমান্বিত রাত। এই রাতের মর্যাদা হাজার মাসের চেয়ে উত্তম। পবিত্র কুরআনে ‘কদর’ নামে স্বতন্ত্র একটি সুরা নাজিল হয়েছে। পাঁচ আয়াতবিশিষ্ট এই সুরায় লাইলাতুল কদরের মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করা হয়েছে। ফলে ইসলামি শরিয়তে এর বিশেষ গুরুত্ব ও তাত্পর্য রয়েছে। মহান রব্বুল আলামিন বলেন, ‘আমি এই কুরআন কদরের রাতে নাজিল করেছি। কদরের রাত সম্পর্কে তুমি কী জান? কদরের রাত হাজার মাস থেকে উত্তম মাস। এই রাতে জিবরাইলসহ সব ফেরেশতা অবতীর্ণ হয়, প্রত্যেক কাজে তাদের প্রভুর অনুমতিক্রমে। এটা নিরাপত্তা, যা ফজরের উদয় পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। (সুরা কদর)।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) রসুল (স.) থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইমান সহকারে এবং প্রতিদানের আশায় লাইলাতুল কদরে নামাজ পড়বে, তার অতীতের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে। (বুখারি : ১৯০১)। হাদিসে ‘ইমানসহকারে’ কথাটির অর্থ হচ্ছে, এই রাতের মর্যাদা ও বিশেষ আমল শরিয়তসম্মত হওয়ার ওপর বিশ্বাস স্থাপন করা। আর ‘প্রতিদানের আশায়’ কথাটির অর্থ হচ্ছে, নিয়তকে আল্লাহ তাআলার জন্য একনিষ্ঠ করা। সুরা দুখানের ৩ নম্বর আয়াতে ইরশাদ হচ্ছে, ‘নিশ্চয় আমি কুরআন অবতীর্ণ করেছি একটি বরকতময় রাতে।’ আর এই রাত হলো শবে কদর।

লাইলাতুল কদর অতি মূল্যবান রাত হওয়ায় মহান রব্বুল আলামিন এর সুনির্দিষ্ট তারিখ গোপন রেখেছেন। তবে হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে,  রসুল (স.) বলেছেন, ‘রমজানের শেষ দশকের বিজোড় রাতগুলোতে লাইলাতুল কদর অনুসন্ধান করো। (বুখারি : ২০১৭)। এর মধ্যে ২৭তম রাতে হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। ইমাম আবু হানিফা (রহ.) কুরআনের সুরা কদর গবেষণা করে ২৭ তারিখ লাইলাতুল কদর হওয়ার পক্ষে যুক্তি দিয়েছেন। তবে রমজানের শেষ দশকের ফজিলতই সবচেয়ে বেশি। প্রিয়নবি (স.) শেষ দশকে ইতিকাফ করতেন। (মুসলিম : ১১৭১)।

এই রাতে মহাগ্রন্থ কুরআন নাজিল হয়, মানব জাতির এই বিরাট নিয়ামতের কারণেই এই রাতের এত মর্যাদা ও ফজিলত। এই কুরআনকে ধারণ করলেই মানুষ সম্মানিত হবে, একটি দেশ ও জাতি মর্যাদাবান হবে; গোটা জাতির ভাগ্য বদলে যাবে। কাজেই এই রাতে বেশি বেশি কুরআন পড়তে হবে। কুরআনের শিক্ষাকে ব্যক্তি ও সমাজজীবনে প্রতিষ্ঠার শপথ গ্রহণ করতে হবে। বাছাইকৃত কিছু আয়াত এই রাতে মুখস্থও করা যেতে পারে। যাদের কুরআনের ওপর প্রয়োজনীয় জ্ঞান রয়েছে, তারা এই রাতে একটি দরসও প্রস্তুত করতে পারেন। কুরআনের এই গভীর অধ্যয়ন আমাদের সৌভগ্যের দ্বার খুলে দেবে। হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, ‘আমি রসুল (স.)কে জিজ্ঞেস করেছিলাম, হে আল্লাহর রসুল (স.)! যদি আমি শবে কদর পেয়ে যাই, তবে আল্লাহর কাছে কী দোয়া করব? রসুল (স.) বলেন, এই দোয়া পড়বে—‘আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুয়্যুম তুহিব্বুল আফওয়া আফু আন্নি।’ অর্থাত্, হে আল্লাহ! তুমি ক্ষমাশীল, ক্ষমা করতে তুমি ভালোবাসো, তাই তুমি আমাকে ক্ষমা করো।

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *