শিরোনাম

মাকে হারিয়েছেন, বোনের অনুপ্রেরণায় ক্যাডার বরিশালের মেহেদী

Views: 37

বরিশাল অফিস :: ৪৩তম বিসিএসে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. মেহেদী হাসান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম ক্যাডার। তার আগে কেউ বিসিএস ক্যাডার হননি। শিক্ষা ক্যাডারে ষষ্ঠ হয়েছেন তিনি। বর্তমানে তিনি ‌বরগুনা ডিস্ট্রিক্ট অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড ফিন‌্যান্স অ‌ফিসে অডিটর হিসেবে কর্মরত আছেন।

সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) ৪৩তম বিসিএসের ক্যাডার ও নন-ক্যাডার পদে নিয়োগের চূড়ান্ত সুপারিশ করেছে ২ হাজার ৮০৫ জনকে। গত ২৬ ডিসেম্বর বিকালে এ ফল প্রকাশ করা হয়। এতে মেহেদী হাসান শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন।

মেহেদীর বাড়ি বরিশালের বাকেরগঞ্জের উত্তর কাটাদিয়াতে। বাবা মো. নুরুল ইসলাম। মায়ের নাম নাসিমা আক্তার। ২০০৫ সালে তিনি ষষ্ঠ শ্রেণিতে থাকা অবস্থায় মা মারা যান। তিনি কাটাদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং বেতাগী সরকারি কলেজ থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেন। মেহেদীর এক বড় বোন রয়েছে।

৪১তম বিসিএসে প্রথম অংশগ্রহণ করেছিলেন। তবে মাস্টার্সের শিক্ষার্থী থাকাকালীন থিসিসের কার্যক্রমের জন্য ভালোভাবে লিখিত প্রস্তুতি নিতে পারেননি। ফলাফল নন-ক্যাডার আসে। ৪৩তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষায় ৪১তম এর চেয়ে ভালো হয়। তবে লিখিত আন্তর্জাতিক বিষয়ের পরীক্ষা দিয়ে কেঁদেছিলেন তিনি।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হন মেহেদী। তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি বলছিলেন, স্নাতকে পড়া অবস্থায় তৃতীয় বর্ষে এসে বিসিএস এর প্রস্তুতি শুরু করি। গতানুগতিক গাইড বই অনুসরণ না করে মূল বা বেসিক বইগুলোতে জোর দিয়েছি। সেগুলো ভালোভাবে আয়ত্ত করি। স্নাতকোত্তরে থাকাকালীন টিউশনি করেছি। তাই গণিত অংশে আলাদা করে বেশি প্রস্তুতি নিতে হয়নি।

৪১তম বিসিএসে প্রথম অংশগ্রহণ করেছিলেন। তবে মাস্টার্সের শিক্ষার্থী থাকাকালীন থিসিসের কার্যক্রমের জন্য ভালোভাবে লিখিত প্রস্তুতি নিতে পারেননি। ফলাফল নন-ক্যাডার আসে। ৪৩তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষায় ৪১তম এর চেয়ে ভালো হয়। তবে লিখিত আন্তর্জাতিক বিষয়ের পরীক্ষা দিয়ে কেঁদেছিলেন তিনি। পরীক্ষাও ভালো হয়নি বলে।

বাকি পরীক্ষাগুলোয় অংশগ্রহণ করবেন না বলে ভেবে নিয়েছিলেন জানিয়ে মেহেদী বলেন, এক বন্ধুর পরামর্শে বাকি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করি। লিখিত পরীক্ষায় পাস করলেও ভাইভায় আশানুরূপ ফলাফল না পাওয়ায় আশাহত হয়েছিলাম। নন-ক্যাডারের জটিলতা চলমান থাকায় চূড়ান্ত ফল দেখব না বলে সিদ্ধান্ত নিই। পরে এক বন্ধু ও এক ছোট ভাই আমার রেজিস্ট্রেশন নাম্বার নিয়ে ফল দেখে। বন্ধু ফোন করে বোনকে জানায়।

বোন ফোন দিয়ে ফলাফল জানানোর সময় ছোট ভাইয়ের অভিনন্দনের মেসেজ পান। এরপর নিজেও দেখে নিশ্চিত হন। এ ফল দেখে নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারেননি জানিয়ে তিনি বলেন, আনন্দে কেঁদে ফেলেছিলাম, ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। ছোটবেলায় মাকে হারিয়ে নানা প্রতিকূলতার মাঝেও দমে যাইনি। সহযোগিতাকারী হিসেবে পেয়েছি বড় বোনকে। হতাশ হলেই বড় বোন ও প্রিয় মানুষের অনুপ্রেরণা নতুন করে লড়তে শিখিয়েছেন।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, ধৈর্য, অধ্যবসায়, উৎসর্গ- এগুলো যদি কারোর মধ্যে থাকে, তবে তারা সফল হবেন বলে বিশ্বাস করি। বিসিএস একটি দীর্ঘ ও অনিশ্চিত যাত্রা। এ যাত্রায় জয়ী গন্তব্যে পৌঁছাতে পরিকল্পিত ও গোছানো প্রস্তুতি সবচেয়ে বেশি জরুরি। শিক্ষাজীবনে কখনো কোথাও কোচিং করিনি। তবে নিজের সাজেশন অনুসরণ করেছি। সাধ্যের মধ্যে সবটুকু দিয়ে চেষ্টা করেছি। আল্লাহ কখনো নিরাশ করেননি।

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *