শিরোনাম

মির্জাগঞ্জে চার কিলোমিটার রাস্তায় ১৫ হাজার মানুষের দুর্ভোগ

Views: 115

 

 
মো:আল-আমিন,পটুয়াখালী: পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার মজিদবাড়িয়া ইউনিয়নের খানজু মার্কেট থেকে চালিতাবুনিয়া হয়ে সুলতানাবাদ পর্যন্ত জন গুরুত্বপূর্ণ প্রায় ৪ কিমি. কাঁচা রাস্তা রয়েছে।

চালিতাবুনিয়া গ্রামের মানুষের চলাচলের একমাত্র রাস্তা এটি। রাস্তাটি পাকা না হওয়ায় শিক্ষার্থীসহ ওই গ্রামের মানুষ ৫০ বছর ধরে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। বর্ষা মৌসুমে এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে প্রতিদিনই গ্রামবাসীকে ফেলতে হয় দীর্ঘশ্বাস। বিগত ১০ বছরে এই উপজেলায় রাস্তাঘাটের অভূতপূর্ব উন্নয়ন ঘটলেও চালিতাবুনিয়া গ্রামে তার ছোঁয়া লাগেনি। যে কারণে প্রতিদিন ১৫ হাজার গ্রামবাসীকে পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চালিতাবুনিয়া এলাকার মানুষের চলাচলের একমাত্র রাস্তা এটি। এই রাস্তা ব্যবহার করেই এখানকার আশেপাশের চার গ্রামের মানুষের দৈনন্দিন কাজ করতে হয়। বর্ষাকালে একটু হালকা বৃষ্টি হলেই রাস্তায় কাদামাটি ও পিচ্ছিলসহ বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়। তখন শিশু ও বয়স্কদের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে এই কাঁচা রাস্তা। ফলে স্বাভাবিকভাবে চলাচলের আর উপায় থাকে না। বর্ষাকালে রাস্তাটিতে হাঁটুসমান কাদা হওয়ায় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা নিয়মিত বিদ্যালয়ে যেতে অবর্নীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এই এলাকার চাষীরা তাদের উৎপাদিত ফসল বাজারজাত নিয়েও পড়েন বিপাকে। জরুরি মুহূর্তে বয়স্ক মানুষ ও রোগীকে কাঁধ করে পাকা সড়কে নিয়ে যেতে হয়। চলাচলের জন্য আর কোনো রাস্তা না থাকায় এ রাস্তা দিয়ে হাটুসমান কাদা পাড়ি দিয়েই স্থানীয় হাট-বাজারে যেতে হয় এলাকাবাসীকে।

এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন চালিতাবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সুলতানাবাদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ভয়াং মাধ্যমিক বিদ্যালয়, তুলাতলা মাদরাসা ও হোসাইনিয়া দাখিল মাদরাসার শিক্ষার্থীরাসহ পাঁচ গ্রামের প্রতিদিন গড়ে ১৫ হাজার মানুষ চলাচল করে। এছাড়াও উপজেলা সদর, প্রাচীন মোগল আমলের শাহী মসজিদ, ভয়াং বাজার এবং সুলতানাবাদে ইউনিয়ন পরিষদ, ইউনিয়ন ভূমি অফিস ও উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যেতেও এই রাস্তাটি ব্যবহার করতে হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অতিদ্রুত রাস্তাটি পাকা করে দেওয়ার জোর দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

চালিতাবুনিয়া গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা বাচ্চু হাওলাদার ও শফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা চরম অবহেলিত এলাকায় বসবাস করি, যার কারণে স্বাধীনতার ৫০ বছর হলেও গ্রামীণ এই অবহেলিত রাস্তাটিতে এখন পর্যন্ত আধুনিকতার কোনো ছোঁয়া লাগেনি। বর্ষাকালে রাস্তাটিতে হাটু সমান কাদা হয়ে যায়। তখন বৃদ্ধ ও শিশুদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়।’

চালিতাবুনিয়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম বলেন,’ বর্ষাকালে ছেলেমেয়েরা ঠিক মতো স্কুলে যেতে পারেনা। আমাদেরও হাটবাজারে যাইতে অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এখানকার কোন মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়লে অথবা গর্ভবতী মহিলাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিতে হয়। আমরা চরম কষ্টে আছি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ রাস্তাটি পাকা করে দিলে আমাদের এই দুর্ভোগ লাগব হতো।’

সংশ্লিষ্ট মজিদবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শহীদুল্লাহ শানু মানুষের দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘বৃষ্টি হলে কাঁচা রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে যায়। এই রাস্তাটি পাকা করা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। খুব শীঘ্রই সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগাযোগ করে রাস্তাটি পাকা করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।

এ বিষয় মির্জাগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো. আলমগীর বাদশা বলেন, বর্তমানে মির্জাগঞ্জ উপজেলায় কোন প্রকল্প বরাদ্দ নেই। স্থানীয় জনসাধারণ লিখিত আবেদন করলে পরবর্তীতে প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে সুপারিশপত্র পাঠানো হবে। ‘

image_pdfimage_print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *